জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার কোনো আলামত নেই, তাই এখন নির্বাচন কমিশনের কাছে বিএনপির কোনো প্রত্যাশা নেই বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে শনিবার দুপুরে ‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ও গণতন্ত্র’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
বৈঠকের আয়োজন করে দ্য ঢাকা ফোরাম নামের একটি সংগঠন।
আমির খসরু বলেন, এ মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে কোনো প্রত্যাশা নেই। সুষ্ঠু নির্বাচনেরও কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না। ক্ষমতাসীনরা রাষ্ট্রীয় খরচে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন কী তাদের কোনো বার্তা দিয়েছে? এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন চুপ কেন? তাদের ভূমিকা কী? তাদের কাছ থেকে যে কোনো পদক্ষেপ আসবে তা বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই।
তিনি বলেন, আমাদের সামনে দুটি পথ খোলা। এক, আমরা গণতন্ত্রের পথে হাঁটবো নাকি, দুই, যারা ক্ষমতা দখল করে আছে তাদের রোধ করবো? এসব ব্যাপারে আমাদের কি পদক্ষেপ নেয়া দরকার, তা বিবেচনা করতে হবে।
আলোচনা সভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশে যে কয়টি নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হয়েছে ততবার বিরোধী দল নির্বাচনে জয়লাভ করেছে। আমি ভারতের কথা এজন্য বলছি কারণ, ভারত তার নিজের স্বার্থে আমাদের দেশে সুষ্ঠু গণতন্ত্রের চর্চা হোক তা তারা চায় না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের অনেক অর্জনের কথা বলা হয়েছে। এসব অর্জন ব্যর্থ হবে যদি না গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে না পারি। আলোচনা একটা বড় বিষয়। সেই সুযোগ না থাকলে গণতন্ত্র ও সুশাসন আসবে না।
সাবেক রাষ্ট্রদূত এম সিরাজুল ইসলাম বলেন, ২০১৮ সালে নির্বাচন হবে। এটা যে সমঝোতার ভিত্তিতে হবে এটার কোনো আশা নেই। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ছিলো ভিন্ন। নির্বাচনের পরদিন ৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচন সংবিধান রক্ষার নির্বাচন। আরেকটি নির্বাচন হবে’। কিন্তু আমরাতো সেই নির্বাচন দেখিনি। তাই ২০১৮ সালের নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি ধারণা করছি, দেশের ৬০ শতাংশ ভোট ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে পড়বে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, আজ দেশে অনেক অর্জনের কথা বলো হচ্ছে, এটা ধোকাবাজি। যে জাতির সরকার গঠনের অধিকার থাকে না সে জাতি গোলাম। আমাদের বড় ব্যর্থতা আমাদের দেশে সরকার আছে, কিন্তু জনগণ ভোট দিতে পারছে না। আমাদের দাবির ভিত্তি কী?
তিনি বলেন, যেখানে জনগণের ভোটের অধিকার থাকে না সেখানে চাটুকারিতা থাকে। দুনীর্তি থাকে। নির্বাচনে চুরি বা দুর্নীতি, সব দুনীর্তির জন্মদাতা।
গোলটেবিল বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী পরিষদের সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সাবেক বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল ফখরুল আলম, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা প্রমুখ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন