আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। নানা অভিযোগে অভিযুক্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বেপরোয়া নেতা-কর্মীদের হাতে ফের বেধড়ক মারধরের শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সাব্রী সাবেরিন গালিব।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজের সমর্থকরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বজন বরণ বিশ্বাসের কক্ষ ভাঙচুর করতে তার হলে যায়। এসময় পেশাগত কাজে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ওই সাংবাদিক মারধরের শিকার হন।
জানা যায়, শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শেষে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বজন বরণ বিশ্বাসের কক্ষ ভাঙচুর করতে কাজী নজরুল ইসলাম হলে যায় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির সমর্থকরা। এসময় ওই হলে আইন বিভাগের ১০ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সাব্রী সাবেরিন গালিব পেশাগত কাজে তথ্য সংগ্রহে গেলে তাকে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বায়েজিদ ইসলাম গল্প, সহ-সভাপতি দ্বীন ইসলাম লিখন, উপ-সমাজ সেবা বিষয়ক সম্পাদক (বহিষ্কৃত) মুনতাসির আহমেদ হৃদয়সহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী বেধড়ক মারধর করে এবং মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে যায়। পরে ওই সাংবাদিককে ঘটনাস্থল থেকে সাংবাদিক সমিতির নেতৃবৃন্দ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এর আগেও গত বছরের ২৬ জানুয়ারি বায়েজিদ ইসলাম গল্প লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক নাহিদুল ইসলামকে স্বস্ত্রীক লাঞ্ছিত করার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার হয়। গত বছরের ১৩ মে এক সাংবাদিককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে দ্বীন ইসলাম লিখনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এরপরেও গত ২২ নভেম্বর ১৬১ সদস্য বিশিষ্ট শাখা ছাত্রলীগের কমিটিতে দ্বীন ইসলাম লিখনকে সহ-সভাপতি করা হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শিক্ষক, সাংবাদিক লাঞ্ছনাসহ বিভিন্ন সময়ে সাধারণ শিক্ষার্থী ও দলীয় নেতা-কর্মীদের মারধরের অভিযোগ রয়েছে। অভিযুক্তরা সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজের একনিষ্ঠ নেতা-কর্মী।
এ বিষয়ে কথা বলতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি ও সধারণ সম্পাদকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, ‘যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বজন বরণ বিশ্বাস হলের টাকা নিয়ে চলে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা তার হলে গেলে এমন একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।’
সাংবাদিককে মারধরের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ বলেন, ‘এ ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করছি। বিচারের জন্য সাংবাদিক সমিতি কঠোর অবস্থানে যেতেও প্রস্তুত রয়েছে।’
ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন প্রক্টরিয়াল বডিসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এসময় তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে এ ঘটনা কোনওভাবেই কাম্য নয়। সাংবাদিক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অনেক গঠনমূলক কাজ করে থাকে। অভিযোগের পরে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষ দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন