প্রকাশিত সংবাদের বিরুদ্ধে "প্রতিবাদ সমাবেশ" করেছে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলা আওয়ামীলীগ। সমাবেশে হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার হাজার হাজার নেতা, কর্মীর বিপুল সমাগম ঘটে। একপর্যায়ে প্রতিবাদ সমাবেশটি নির্বাচনী জনসভায় পরিণত হয়।
শনিবার (২৪ ফেব্রয়ারি) বিকেলে পাটগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ চলাকালীন সময়ে হঠাৎ করে উপজেলা আ'লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাবুল তার লোকজনসহ এসে উপস্থিত হওয়ায়, সমাবেশটি পুর্ণ প্রাণচাঞ্চল্যতা ও জনসমাগমে পুর্ণতা লাভ করে।
পাটগ্রাম উপজেলা আ'লীগের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম নাজুর সভাপতিত্বে উক্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লালমনিরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন এমপি।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, লালমনিরহাট-কুড়িগ্রাম সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট সফুরা বেগম রুমি, লালমনিরহাট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান।
এসময় বক্তব্য রাখেন, হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন বাচ্চু, পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমীন বাবুল, পৌর মেয়র শমসের আলী, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মেজবাহ উদ্দিন আহম্মেদ, পৌর আ'লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী আসাদ, মহিলা আ'লীগের সভাপতি সাজেদা আক্তার প্রমূখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি মোতাহার হোসেন হলুদ সাংবাদিকতা পরিহার করে স্বচ্ছ, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের আহবান জানান।
তিনি বলেন, দেশ স্বাধীনতার ৪৭ বছরে লালমনিরহাট জেলার উন্নয়নের সাথে তার ক্ষমতায় থাকা ৭ বছরের উন্নয়ন ১০০ গুন বেশি না হলে রাজনীতি ছেড়ে দেবার চ্যালেঞ্জ করেন মোতাহার হোসেন এমপি।
প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে দেশে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৫ বছরে তিনি ৩৭৭টি উপজেলা টুর করেন এবং বার্ষিক ৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্ধ থেকে ৫৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্ধ এনেছি।
স্কুলের বাচ্চাদের বিনামুল্যে বিস্কুট ও বই বিতরণের কথা উল্লেখ করে মোতাহার হোসেন বলেন, তিনি প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সকল বাচ্চাদের জন্য বিনামুল্যে বিস্কুট বিতরণ ও জানুয়ারির ১ তারিখে নতুন বিতরণের ব্যবস্থা একমাত্র তিনিই করেছেন।
"মঙ্গমাতা টুর্নামেন্ট" প্রতিষ্ঠা করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই পাটগ্রামের বাচ্চারা সেই মঙ্গমাতা টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
হাতীবান্ধা পাটগ্রাম উপজেলার সকল স্কুল পাকা করনের কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে কয়টা স্কুল বাকি আছে সে কয়টা স্কুল পাকা করনের জন্য ইতিমধ্যে টেন্ডার হয়েছে।
এসময় তিনি বুড়িমারী বন্দরের ট্রাক স্ট্যান্ডের চাঁদাবাজী ও শ্রমিক হ্যান্ডেলিংয়ের অনিয়ম প্রধানমন্ত্রীকে লিখিত আকারে জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। তিনি আবারো আগামীতে নৌকার প্রার্থী হিসাবে উপস্থিত জনতার কাছে ভোট চেয়ে বলেন, আগামীতে আমি নির্বাচিত হলে অবশিষ্ট ২০/২৫ শতাংশ কাজ সমাপ্ত করব।
এমপি মোতাহার হোসেন দাবী করেন, তার ও পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশন করার চাইতে তিনি, সেই সংবাদ ফটোকপি করে বিলি করায় গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ্যাডঃ মতিয়ার রহমান, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক নইম নিজামকে একজন রাজাকারের ছেলে বলে দাবী করেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর হাতেপায়ে ধরে নইম নিজাম পত্রিকার সার্কুলেশন নিয়েছে আর আজকে আ'লীগের জনপ্রিয় এমপিদের বিপক্ষে লিখছে। তাই প্রধানমন্ত্রী নইম নিজামের বিরুদ্ধে ১০০টি মামলা করার কথা বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, নইম নিজাম একজন পিচ কমিটির সদস্য রাজাকারের ছেলে। আর একজন রাজাকারের ছেলে কখনই একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে লিখতে পারেনা আর এটাই স্বাভাবিক।
এসময় তিনি এমপি মোতাহার হোসেন ও তাঁর পরিবার সম্পর্কে প্রকাশিত সংবাদের তীব্র নিন্দা জানান এবং মোতাহার হোসেন এমপিকে লালমনিরহাটের উন্নয়নের রোল মডেল হিসাবে উল্লেখ করেন।
পাটগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাবুল তার বক্তব্যে বলেন, যারা বাংলাদেশের উন্নয়নকে ব্যাহত করতে চায়, যারা মুক্তিযোদ্ধকে বিশ্বাস করেনা, যাদের কারণে ২০১৪ সালে এই পাটগ্রাম উপজেলায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছিলো, তাদের ইঙ্গিতেই ঐ বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় আমাদের নেতা মোতাহার হোসেনের নামে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকাসহ যে সকল প্রত্রিকা মিথ্যা ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশন করেন, অনতিবিলম্বে তা বন্ধ করার আহবান জানিয়ে আরও বলেন, আজকের পর থেকে কোন পত্রিকায় আ'লীগের কোন নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা সংবাদ যদি পরিবেশন করে, তাহলে কোন হুকুম দেবার অপেক্ষায় না থেকে তাৎক্ষনিকভাবে রাস্তায় নামিয়ে আসার এবং এর জোড়ালো প্রতিবাদ করার আহবান জানান।
তিনি আরও বলেন, আপনারা প্রস্তুত থাকবেন, বিগত দিনে লালমনিরহাট-১ আসনে আমরা যেভাবে বিজয় এনেছি, আগামীদিনেও সকল বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আবারো প্রধানমন্ত্রী করার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে উন্নত বাংলাদেশের মানুষে রুপান্তরিত করার আহবান জানান।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন