সংসদে নেই, আনুষ্ঠানিক বিরোধী দলেও এখন নেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। তবু জনসমর্থন বিবেচনায় দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। ২০০৬ সালে ক্ষমতা ছাড়ার পর থেকে নানা চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দলটি। দুই দফায় সরকারবিরোধী আন্দোলনে গেলেও সাফল্যের দেখা পায়নি। উল্টো ৫০ হাজারের বেশি মামলার মুখোমুখি হতে হয়েছে দলটির নেতাকর্মীদের।
বিএনপির দেওয়া তথ্যমতে, ২০০৭ থেকে চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত করা এসব মামলায় আসামি প্রায় ১২ লাখ নেতাকর্মী। এ ছাড়া এই সময়ে অন্তত ৭৭৩ জনকে হত্যা এবং কমপক্ষে ৭২ জনকে গুম করা হয়েছে বলে দলটির দাবি।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব ও দফতরের দায়িত্বে থাকা নেতা রুহুল কবির রিজভী প্রিয়.কমকে বলেন, ‘অবৈধ, অনৈতিক আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধীদল ও বিরোধীমত দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর ভর করে মামলাকে হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে। উদ্দেশ্য আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ও এর নেতৃত্বকে নির্বাচনের বাইরে রাখা। এটা মানুষের সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিয়ে রাষ্ট্রীয় যন্ত্রের সাহায্যে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার কৌশল ছাড়া আর কিছু নয়।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্তে দেখা গেছে, ২০০৭ সাল থেকে ২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দলটির ৭৭২ জন খুন, ৭২ জন গুম করা হয়েছে বলে তথ্য সংরক্ষণ করা হয়েছে। নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা সাত বিভাগ মিলিয়ে ৪৯ হাজার ৫৪৬টি। আর এসব মামলায় মোট আসামি ১১ লাখ ৬৬ হাজার ৭৪২ জন নেতাকর্মী। পাশাপাশি এই সময়ে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন দুই হাজার ৪২৮ জন।
এ ছাড়া ২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত খুন হয়েছেন একজন। মামলার সংখ্যা ৫২৮টি। এগুলোতে আসামি করা হয়েছে ২৪ হাজার ৭০৭ নেতাকর্মীকে।
সব মিলিয়ে মনিটরিং সেলের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৭৭৩ জনকে খুন, ৭২ জনকে গুম করা হয়েছে। মামলার সংখ্যা ৫০ হাজার ৭৪টি। আর মোট আসামির সংখ্যা ১১ লাখ ৯১ হাজার ৪৪৯ জন।
এ ছাড়াও ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৪ হাজার ৮০০ জন নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর রাজধানী ঢাকার চার থানায় (শাহবাগ-রমনা-পল্টন-মতিঝিল) নতুন ৪৮টি মামলা হয়েছে।
বিএনপি দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৭ থেকে ২০১৭ সময়ের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৪ হাজার ৩৩০টি। সবধরনের নেতাকর্মী মিলিয়ে ঢাকা বিভাগে হয়েছে ৬ হাজার ২১৮টি মামলা, ঢাকা মহানগরে হয়েছে ১৪ হাজার ৩০০টি, রাজশাহী বিভাগে ৩ হাজার ২২০টি, রাজশাহী মহানগরে ৫৮৬টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭ হাজার ৩৩৭টি, চট্টগ্রাম মহানগরে ১ হাজার ৩৮৮টি, রংপুর বিভাগে ১ হাজার ৪৩৭টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ১ হাজার ১৪৫টি, বরিশাল বিভাগে ২ হাজার ৩৭৯টি, বরিশাল মহানগরে ১৪৮টি, খুলনা বিভাগে ৫ হাজার ১৩৫টি, খুলনা মহানগরে ৫২৯টি, সিলেট বিভাগে ১ হাজার ৭৬টি, সিলেট মহানগরে ৩১৮টি মামলা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতা ১৫৮ জন। এ ছাড়া ঢাকা বিভাগে আসামি ২ লাখ ৬৭ হাজার ৯৫২ জন, ঢাকা মহানগরে ১ লাখ ৯৫ হাজার ১৪৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ৮৯ হাজার ৭১৫ জন, রাজশাহী মহানগরে ৮ হাজার ৬৫২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১ লাখ ৭ হাজার ৩৫৫ জন, চট্টগ্রাম মহানগরে ৩৮ হাজার ৮৭৪ জন, রংপুর বিভাগে ৮৬ হাজার ৫২৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১ লাখ ৩ হাজার ৬৪০ জন, বরিশাল বিভাগে ৫৮ হাজার ৬৭ জন, বরিশাল মহানগরে ৩৫ হাজার ৪৭৮ জন, সিলেট বিভাগে ১১ হাজার ৫১৬ জন, সিলেট মহানগরে ২৪ হাজার ১৪২ জন, খুলনা বিভাগে ১ লাখ ৩২ হাজার ৫৭৪ জন এবং খুলনা মহানগরে ৬ হাজার ৯৪৯ জন।
বিএনপির মনিটরিং সেলের সার্বিক দায়িত্বে থাকা সাবেক ওসি মো. সালাহ উদ্দিন খান প্রিয়.কমকে বলেন, ‘মামলাগুলোর বাদী সরকারই। মামলা যখন ফৌজদারী কার্যবিধিতে আসে তখন সরকারই বাদী হয়ে যায়।’
মামলা ও আসামির সংখ্যা কীভাবে সনাক্ত করেছেন জানতে চাইলে পুলিশের সাবেক এই কর্মকর্তা বলেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্দেশক্রমে আমি ২০১২ সাল থেকে এই নিয়ে করে যাচ্ছি। আমি ৪৭ জেলা, ৩৬৫ উপজেলা, ১৬৯টি ইউনিয়ন সরেজমিনে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করেছি। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলা, থানা ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা সহযোগিতা করেছেন। এখনো প্রতি সপ্তাহে মামলার এহজাহার নয়াপল্টন বরাবর বিভিন্নভাবে পৌঁছানো হচ্ছে।’
এ বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রিয়.কমকে বলেন, বিএনপি এবং এর সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের ধারাবাহিকভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে। কেউ কেউ জামিন পেলেও কারান্তরীণ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন নতুন মামলা দিয়ে জেলগেট থেকে গ্রেফতার করে কারাবাসী করে রাখা হচ্ছে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘চিরকাল রাষ্ট্রক্ষমতার স্বাদ ধরে রাখতে সরকার দেশের বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম চালিয়ে দেশকে বিরোধীদল শূন্য করতে চাচ্ছে। আর এই লক্ষ্য পূরণে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় জামিনপ্রাপ্ত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন নতুন মামলা দিয়ে কারাগারে পুরে রাখতে ভ্রষ্টনীতির আশ্রয় নিয়েছে।’
এই বিষয়ে জানতে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক ( এআইজি) সোহেলী ফেরদৌসীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি দেশের বাইরে রয়েছেন। এরপর পুলিশ সদর দফতরের মিডিয়ার দায়িত্বে থাকা ডিআইজি এ কে এম শহিদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকেও পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে এই বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম প্রিয়.কমকে বলেন, ‘সারা দেশের প্রতিটি থানায় প্রতি মাসে কতগুলো মামলা হয়, পুলিশ সদর দফতরে সেটার তথ্য আছে। কিন্তু শুধু বিএনপির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কতগুলো মামলা রয়েছে বা কতজন আসামি রয়েছেন তা আলাদা করে কোনো হিসাব নেই।’
ঢাকা বিভাগ
এই বিভাগের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলায় মামলা ১ হাজার ৮০৯টি, আসামি ২২ হাজার ৪৩০ জন। মুন্সীগঞ্জে মামলা ২৮৪টি, আসামি ৩৪ হাজার ১৩৮ জন। টাঙ্গাইলে মামলা ১৩৭৯টি, আসামি ১৬ হাজার ৮০৯ জন। কিশোরগঞ্জে মামলা ৩৯৩টি, আসামি ১০ হাজার ৭৬১ জন। ফরিদপুরে মামলা ৫৬টি, আসামি ২ হাজার ৬৫০ জন। গোপালগঞ্জে মামলা ১২১টি, আসামি ২ হাজার ৭৪৪ জন। শরীয়তপুরে মামলা ২৯২টি, আসামি ১৩ হাজার ৩৯৩ জন। মানিকগঞ্জে মামলা ১২৯টি, আসামি ২২ হাজার ১১৩ জন। গাজীপুরে মামলা ১৮৪টি, আসামি ২৬ হাজার ১০৫ জন। মাদারীপুরে মামলা ১০৫টি, আসামি ৪ হাজার ৮৩০ জন। ঢাকায় মামলা ১ হাজার ২৫৯টি, আসামি ১ লাখ ৬ হাজার ২৮৯ জন। নরসিংদীতে মামলা ১০৫টি, আসামি ৩ হাজার ৪৬৬ জন। চাঁদপুরে মামলা ১০২টি, আসামি ২ হাজার ২২৪ জন।
মোট ১৩ জেলায় মামলার সংখ্যা ৬ হাজার ২১৮টি এবং আসামির সংখ্যা ২ লাখ ৬৭ হাজার ৯৫২ জন নেতাকর্মী।
চট্টগ্রাম বিভাগ
জেলা মামলা আসামি
রাঙ্গামাটি ১৩৫টি ১৪০২ জন
বান্দরবান ১৬৭টি ১৮০২ জন
ফেনী ১৩৪০টি, ১৪৪৪৩ জন,
চাদপুর ৩৪৩টি, ৮৫৮৬ জন,
চট্টগ্রাম ১৬০৯টি, ১৪৮৮১ জন,
কুমিল্লা ১৫৬৮টি, ১১৬৭৬ জন,
কক্সবাজার ২৮৯টি, ১৩৮৮৫ জন,
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১৯২টি, ৬৯৫৪ জন,
নোয়াখালী ১৪০৯টি, ২২৯৯২জন,
লক্ষিপুর ২৮৫টি, ১০৭৩৪ জন।
মোট মামলা সংখ্যা ৭৩৩৭টি এবং আসামির সংখ্যা ১০৭৩৫৫ জন নেতাকর্মী।
রাজশাহী বিভাগ
জেলা মামলা আসামি
পাবনা ২৪৭টি ১৪৮৯১ জন,
সিরাজগঞ্জ ২৯৭টি, ১৪৩৫৫ জন,
জয়পুরহাট ২১৭টি, ৩৮৯৮ জন,
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫৭টি, ২৪৯৮ জন,
নওগা ১০৮টি, ২৯৩৬ জন,
নাটোর ১২১৭টি, ১৬৩৭২ জন,
রাজশাহী ৩৮৪টি, ১২৪৬৬ জন,
বগুড়া ৪৯৩টি, ২২৩১৯ জন
মোট মামলার সংখ্যা ৩ হাজার ২২০টি এবং আসামি করা হয়েছে ৮৯ হাজার ৭১৫ জন নেতাকর্মীকে।
রংপুর বিভাগ
জেলা মামলা আসামি
রংপুর ২৭৬টি, ১০১৯৮ জন,
নীলফামারী ১১৮টি, ২৬৪২ জন,
কুড়িগ্রাম ১৫৪টি, ১৬১৪৯ জন,
দিনাজপুর ১০৩টি, ১১৯৩৮ জন,
পঞ্চগড় ১৩৭টি, ২২৪৩ জন,
ঠাকুরগাঁও ১৬৯টি, ৩৪৪৩ জন,
গাইবান্ধা ৩৩৩টি, ২২৫৭২ জন,
লালমনিরহাট ১৪৭টি, ১৭৩৩৮ জন
মামলার সংখ্যা ১৪৩৭টি এবং আসামির সংখ্যা ৮৬৫২৩ জন নেতাকর্মী।
ময়মনসিংহ বিভাগ
জেলা মামলা আসামি
ময়মনসিংহ ৪০৯টি, ১২৩৬১ জন,
শেরপুর ৩০৫টি, ১০২৪৯ জন,
জামালপুর ২৯৯টি, ৫৩১৩৮ জন,
নেত্রকোনা ১৩২টি, ২৭৮৯২ জন
মোট মামলার সংখ্যা ১১৪৫টি এবং আসামির সংখ্যা ১০৩৬৪০ জন।
বরিশাল বিভাগ
জেলা মামলা আসামি
ভোলা ৩৮৩টি, ৬২০৭ জন,
পটুয়াখালী ৪০১টি, ১৬৪৩৯ জন,
পিরোজপুর ৩৬৭টি, ৫০২৮ জন,
বরগুনা ২৭০টি, ৭২৩৭ জন,
বরিশাল ৭১৫টি, ১৭৮২৬ জন,
ঝালকাঠি ২৪৩টি, ৫৩৩০ জন
মোট মামলার সংখ্যা ২৩৭৯টি এবং আসামির সংখ্যা ৫৮০৬৭ জন।
খুলনা বিভাগ
জেলা মামলা আসামি
সাতক্ষীরা ১৩৮৮টি, ১৪৩৬৮ জন,
মাগুড়া ৭২২টি, ১৪৩০৭ জন,
ঝিনাইদহ ৪৯৩টি, ১৬৮৬৫ জন,
মেহেরপুর ২৩০টি, ২২২৮৩ জন,
বাগেরহাট ২৮৩টি, ১৩৬৬৬ জন,
যশোর ৫৬৮টি, ১৬৭৩৯ জন,
নড়াইল ৪৭৯টি, ১৩২৪২ জন,
কুষ্টিয়া ৭৩২টি, ১৪৮৬১ জন,
চুয়াডাঙ্গা ১০৯টি, ৩৩৬৫ জন,
খুলনা ১৩১টি, ২৮৭৮ জন
মোট মামলার সংখ্যা ৫১৩৫টি এবং আসামির সংখ্যা ১৩২৫৭৪ জন।
সিলেট বিভাগ
জেলা মামলা আসামি
মৌলভীবাজার ২৭৩টি, ২৬১৬ জন,
সিলেট ২৫৪টি, ১৯৭২ জন,
হবিগঞ্জ ২৭৫টি, ৩৯৫৮ জন
সুনামগঞ্জ ২৭৪টি, ২৯৬৯ জন।
১০৭৬টি মামলায় মোট আসামি করা হয়েছে ১১৫১৬ নেতাকর্মীকে।
মহানগর
ঢাকা মহানগরে মামলা ১৪ হাজার ৩০০টি, আসামি ১ লাখ ৯৫ হাজার ১৪৭ জন। রাজশাহী মহানগরে মামলা ৫৮৬টি, আসামি ৮ হাজার ৬৫২ জন। খুলনা মহানগরে মামলা ৫২৯টি, আসামি ৬ হাজার ৯৪৯ জন। চট্টগ্রাম মহানগরে মামলা ১ হাজার ৩৮৮টি, আসামি ৩৮ হাজার ৮৭৪ জন। সিলেট মহানগরে মামলা ৩১৮টি, আসামি ২৪ হাজার ১৪২ জন।বরিশাল মহানগরে মামলা ১৪৮টি, আসামি ৩৫ হাজার ৪৭৮ জন।
মোট ১৭ হাজার ২৬৯টি মামলায় আসামি করা হয়েছে ৩ লাখ ৯ হাজার ২৪২ জন নেতাকর্মীকে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়ার আগে ও পরে যেসব নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন তারা হলেন- দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের বড় ছেলে সুনিন্দ্য ইসলাম সুমিত, ছোট ছেলে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহ তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, সহ-বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রওনকুল ইসলাম টিপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য মতিউর রহমান মন্টু, নাজিম উদ্দিন আলম, মশিউর রহমান বিপ্লব, বিএনপির নেতা হাসান মামুন, বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল শওকত সরকার, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইয়াসিন আলী, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মুজিবুর রহমান, মহিলা দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সভাপতি বেগম রাজিয়া আলিম, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-গণসংযোগ বিষয়ক সম্পাদক আমজাদ হোসেন শাহাদাৎ, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জাব্বার, যুবদল নেতা মো. রুবেল, মো হানিফ, মো. দুলাল, মামুন আহম্মেদ, রাকিব আকন্দ, মহিলা দলের নেত্রী হোসনা, পারভিন, দিথি, লায়লা, জাকিয়া।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান চেয়ারম্যান, চকবাজার থানা বিএনপির নেতা ফরিদ উদ্দিন জুয়েল, উত্তরা পূর্ব থানার সহ-সভাপতি শাহ আলম, বিএনপি নেতা মাহবুব খান, সোকন মিয়া, মিন্নাত আলী, চকবাজার থানা বিএনপি নেতা ইব্রাহিম এবং যাত্রাবাড়ী থানা বিএনপি নেতা আমিনুর রহমান,চকবাজার থানা বিএনপি’র যুগ্ম আহবায়ক শফিকুল ইসলাম রাসেল, শাহবাগ থানা বিএনপির নেতা মো. খলিল, মতিঝিল থানা বিএনপির নেতা রানী বাবু, খিলগাঁও থানা বিএনপির নেতা আমির সর্দার, রোমান, লিংকন, ঢাকা মহানগর উত্তর রুপনগর থানা বিএনপি নেতা মো মুক্তার হোসেন, উত্তর পশ্চিম থানা বিএনপির নেতা রহমত উল্লাহ দুলাল, তোজাম্মেল হক সোহাগ।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সহ-সভাপতি মো মাসুদ খানের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে না পেয়ে আটক করা হয় তার ছোট ভাই রাহাত খানকে। এ ছাড়া গ্রেফতার আছেন দারুস সালাম থানা বিএনপির নেতা জাকির হোসেন সজীব, শেরেবাংলা নগর থানা বিএনপির নেতা আলমগীর, রুপনগর থানা বিএনপির নেতা মুক্তার হোসেন, পল্লবী থানা মহিলা দলের নেত্রী সৈয়দ দিলারা কলি, মনোয়ারা বেগম, অ্যাডভোকেট সাহিদা, মোসাম্মৎ শামীমা, জাসাস ঢাকা মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক মো শফিকুল হাসান রতন, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন, তুষার, আসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দল কার্যালয়ের অফিস সহকারী সুমন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মোমিনুল হক, জেলা যুবদলের সদস্য শরীফ হোসেন, মুন্সীগঞ্জ জেলা যুবদলের সহ সভাপতি আব্দুস সালাম মোল্লা, যুবদল নেতা সেলিম।
রাজশাহীর বাঘা উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আরমান মৃধা, নোয়াখালী জেলার জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং কাবিলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাহার, সেনবাগ উপজেলা যুবদলের সভাপতি মির্জা মোস্তফা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক, চাঁদপুর জেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সম্পাদক মানিক মিয়া,কচুয়া উপজেলা ছাত্রদলের সহ সভাপতি বোরহান উদ্দিন বাহার, উপজেলা বিএনপির নেতা লিটন।
জ্যেষ্ঠ নেতাদের নামে মামলা
বিএনপির দফতর সূত্রে জানা যায়, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে ৩৪টি মামলা। সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ২১টি মামলা হয়েছে। মামলার সংখ্যা অনুযায়ী, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে ৮৮টি, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে ৫২টি ও গয়েশ্বরচন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে ৩৭টি। তরিকুল ইসলাম ও সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে রয়েছে ১৪টি করে মামলা। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৯টি করে মামলা। নজরুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে ৭টি, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা রয়েছে। এম কে আনোয়ার ৩৪টি মামলা মাথায় নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বিরুদ্ধে ৪৯টি মামলা হয়েছে। চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে রয়েছে ৫৪টি মামলা।
এ ছাড়া সারওয়ারী রহমান ৬টি, রিয়াজ রহমান ২টি, এজে মোহাম্মদ আলী ৬টি, আমানউল্লাহ আমান ৯৬টি, মিজানুর রহমান মিনু ২৪টি, তৈমূর আলম খন্দকার ১৩টি, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ৪টি, আবদুল্লাহ আল নোমান ৬টি, বরকতউল্লাহ বুলু ৬১টি, মো শাহজাহান ৯টি, আবদুল আউয়াল মিন্টু ৭টি, শামসুজ্জামান দুদু ১৭টি, ব্যারিস্টার আমিনুল হক ২৩টি, মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন ৬টি, মজিবুর রহমান সরোয়ার ১৩টি, জয়নাল আবদীন ফারুক ৪৭টি, আতাউর রহমান ঢালী ১৩টি, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ৪১টি, খায়রুল কবির খোকন ১৪, হাবীব-উন নবী খান সোহেল ১২৯টি, হারুন-অর রশিদ ১৩টি, আসলাম চৌধুরী ৯টি, নাদিম মোস্তফা ২৯টি, শহীদউদ্দিনচৌধুরী এ্যানী ২৯টি, এবিএম মোশাররফ হোসেন ১৩টি, আজিজুল বারী হেলাল ২৯টি, বিলকিস জাহান শিরীন ৯টি, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ৪৭টি, ফজলুল হক মিলন ৯টি, নজরুল ইসলাম মঞ্জু আকন কুদ্দুসুর রহমান ৬টি, তাইফুল ইসলাম টিপু ৬টি, শিরীন সুলতানা ১২টি, আসাদুল হাবিব দুলু ১৩টি মামলার আসামি।
এর বাইরেও দেড় শতাধিক কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলে বিএনপির দফতর থেকে জানানো হয়েছে।
প্রিয়
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন