বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, উচ্চ আদালত দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে যেকোনো রায় দিতে পারেন। কিন্তু এক পক্ষের বক্তব্য শুনে এই ধরনের আদেশ দেয়া মোটেই যুক্তিসঙ্গত হয়নি। এতে দেশের উচ্চতম আদালতের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন হয়েছে বলে আমরা মনে করি।’
বুধবার (১৪ মার্চ) দুপুরে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, ‘নিম্ন আদালত সম্পূর্ণভাবে সরকারের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হচ্ছে। আইনগতভাবেই সেটা তারা সেভাবে করে নিয়েছেন। নিম্ন আদালতের বিচারকদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি- এগুলো সব চলে গেছে আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে রাষ্ট্রপতির অধীনে। অর্থাৎ নির্বাহী বিভাগের কাছেই এখন চলে গেছে। আর যারা নিম্ন আদালতে কাজ করেন তারা সরকারি কর্মকর্তা। মামলার নথি আসবে ১৫ দিনের মধ্যে, এটা তো পাঠানো ২ ঘণ্টার ব্যাপার। এগুলো কারা হ্যান্ডেল করেন? সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা করেন। তারা সরকারের কথায় এসব কাজ করেন। বিভিন্ন আদালতে আমাদের (বিএনপি) যে মামলাগুলো আছে, সেগুলোর একটা মামলায় জামিন পেলে আরেকটা মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়।'
সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, এটা একেবারেই বেআইনি। তারপরও করছেন তারা, কারা করছেন? যারা নিম্ন আদালতে কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিচারপতি আছেন, তারা। কারণ তাদের জবাবদিহিতা নির্বাহী বিভাগের কাছে। এটা বাংলাদেশে দেখবো তা কোনো দিন ভাবিনি।’
আজকে বেগম খালেদা জিয়ার হাইকোর্টের জামিন দেয়ার রায় আপিল বিভাগ স্থগিত করে বিএনপিকে বিস্মিত করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সারা দেশের মানুষ দেশের উচ্চ আদালত থেকে যা প্রত্যাশা করেনি, সেটাই আজকে ঘটেছে। মামলা শুনানি করার সময় আপিলকারী দুদকের আইনজীবীর বক্তব্য উপস্থাপন করার পর, বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের বক্তব্য না শুনে হাইকোর্টে দেয়া জামিনের আদেশটি রবিবার পর্যন্ত স্থগিত করার আদেশ দেয়া হয়েছে। এতো তাড়াহুড়া করে অপর (খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের) পক্ষের বক্তব্য না শুনে রায় আমরা কেউ প্রত্যাশা করিনি। উচ্চ আদালত দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে যেকোনো রায় দিতে পারেন। কিন্তু এক পক্ষের বক্তব্য শুনে এই ধরনের আদেশ দেয়া মোটেই যুক্তিসঙ্গত হয়নি। এতে দেশের উচ্চতম আদালতের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন হয়েছে বলে আমরা মনে করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘উচ্চ আদালত বিচার প্রার্থী জনগণের প্রতিপক্ষ হতে পারে না। দেশের সুবিচার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সুপ্রিম কোর্টের। আজকে এই রায়ে আমরা ক্ষুব্ধ, দুঃখিত এবং আশাহত হয়েছি।’
একই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারান্তরীন রাখার জন্য, রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে সরানোর জন্য, বিভিন্ন ছলচাতুরি ও কলাকৌশলের মধ্য দিয়ে সরকার জামিন বিলম্বিত করছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, ড. আবদুল মঈন, মির্জা আব্বাস, খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবদীন, খন্দকার মাহবুব হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী, আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন