বন্ধু তোমার পথের সাথীকে চিনে নিও
মনের মাঝেতে চিরদিন তাকে ডেকে নিও
ভুলো না তারে ডেকে নিতে তুমি।
হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সুরে শ্রীকান্ত আচার্য্য এর গানটিতে প্রকৃত বন্ধুকে চিনে নেওয়ার আহ্বান। কারণ প্রকৃত বন্ধুই যে বিপদের সময় পাশে দাঁড়ায়। আর বিপদে পাশে থাকা বন্ধুকে কখনোই ফেলতে নেই কারণ তাঁর বন্ধুত্ব যে প্রমাণিত। কিন্তু আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডে ধ্রুব এই সত্যের বিরুদ্ধেই তাদের অবস্থান দেখা যাচ্ছে। দু:সময়ের প্রমাণিত বন্ধুদেরই যে দূরে ঠেলছে আওয়ামী লীগ।
ব্যাবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি, শিল্প প্রতিষ্ঠান হামীম গ্রুপের মালিক এ কে আজাদের গুলশানের বাড়ি আজ ভেঙে দিচ্ছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এ কে আজাদের আরেকটি পরিচয় আছে, ওয়ান ইলেভেনের সংকটাপন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের পাশে ছিলেন তিনি। অথচ এই আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ই দু:সময়ের বন্ধু এ কে আজাদের বাড়ি ভাঙা হলো। কোনো বিষয়ে অভিযোগ থাকলে এর সমাধানও থাকতে পারে তাই বলে বাড়ি ভেঙে দেওয়ার বিষয়টি তো চরম শত্রুর ক্ষেত্রেও ১০ বার চিন্তা করা হয়।
অবশ্য আওয়ামী লীগের দু:সময়ের বন্ধুতের ত্যাগ করে বন্ধুহীন হওয়ার প্রক্রিয়া চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর কথাই ধরা যাক। ওয়ান ইলেভেনে তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার মুক্তি জন্য কত উদ্যোগই নিয়েছেন। তিনিই প্রথম রাজপথে নেমেছেন। অথচ এই মোদাচ্ছের আলীই এখন স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদানের অনুষ্ঠানেরও আমন্ত্রণ পত্র পান না।
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন। ৮০র দশকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে লড়াকু সৈনিক হিসেবে পরিচিত। হরতাল, অবরোধে সবার সামনে থাকতেন। পিকেটিং করতে গিয়ে পুলিশের মার খেতেন। ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনের আগেও উত্তাল আন্দোলনে সাহারা ছিলেন বীরের মতোই। পুলিশের লাঠি পেটা, নির্যাতন কোনো কিছুই তাঁকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে টলাতে পারেনি। ওয়ান ইলেভেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য জানপ্রাণ দিয়ে খেটেছেন। পরে ২০০৮ এর নির্বাচনের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও হন। কিন্তু আওয়ামী লীগের টানা দ্বিতীয় মেয়াদের তাঁর কোনো খবর নেই। কোথায় হারালেন আওয়ামী লীগের দু:সময়ের এই বন্ধু-কেউ কি তাঁর খোজ রেখেছেন?
সিনিয়র আইনজীবী সৈয়দ রেজাউল করিম ওয়ান ইলেভেনে সংকটময় সময় কত অবদানই তো রাখলেন। কিন্তু যে আওয়ামী লীগের পাশে তিনি দাঁড়িয়েছেন তারা কি এই আইনজীবীর আর কোনো খোঁজ রেখেছে?
আওয়ামী লীগের দু:সময়ের আরেক বন্ধু এস এম মালেক। ৭৫ পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের সংকটের সময়ে শেখ হাসিনাকে রক্ষায় সর্বোচ্চ দিয়েছেন তিনি। ৯৬তে হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা। এই শেষ। এরপর আওয়ামী লীগ তাঁকে ভুলে গেছে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন