রাজপথে আন্দোলন ব্যাতিরেখে শুধু আইনি লড়াইয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির সম্ভব নয় বলে মনে করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ইনশাল্লাহ আমাদের মধ্যে ফিরে আসবেন। যতই কলাকৌশল করা হোক না কেনো। এই যে বললাম নিম্ন আদালত, নিম্ন আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, বেঞ্চ ক্লার্করা, কেরানিরা, স্টাফরা- এরা তো সব সরকারের কর্মচারী। সুতরাং আমরা আইনি লড়াই করব, আমাদের আবার রাজপথেও থাকতে হবে। শুধু আইনি লড়াই দিয়ে এই যুদ্ধে জয়লাভ করার সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি না।’
বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের প্রসঙ্গ টেনে সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, ‘মাজদার হোসেন মামলার মাধ্যমে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণে নিশ্চিত করার জন্য সুপ্রিম কোর্ট গত ৮/১০ বছর যাবত কাজ করে আসছেন। কিন্তু এসকে সিনহা (সাবেক প্রধান বিচারপতি) চলে যাওয়ার পরে নিম্ন আদালতের শৃঙ্খলা বিধির গ্যাজেট হয়ে যাওয়ার পরে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের সুপ্রিম কোর্টের ওই রায়ের কোনো কার্যকারিতা থাকলো না। কারণ নিম্ন আদালত এখন সরকারের অধীনে চলে গেছে। তাহলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকে কিভাবে?’
বর্তমান সরকারের শাসনামলকে ‘ভয়ংকর’ অভিহিত করে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আমাদের এক বিরাট সংকটকাল চলছে। শুধু বিএনপির জন্য নয়, জাতীয়তাবাদী শক্তিসমূহের জন্য নয়, সারা জাতির জন্য। আমার জীবনে এমন সংকট দেখি নাই। অনেক আন্দোলন দেখেছি, অনেক বড় বড় সংকট দেখেছি, মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরে সংকটসময় দেখেছি কিন্তু এরকম অবস্থা যা বর্ণনা করা যায় না।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের এখন কোনও সংজ্ঞা খুঁজে পাওয়া যায় না। আমি মনে করি, সেই ’৭৫ সালে সাংবিধানিক একদলীয় শাসনের চাইতে বর্তমানে যে একদলীয় শাসন চলছে সেটা আরও অনেক নিম্নমানের, নিচুস্তরের, অমানবিক। ইংরেজীতে বলে ইললেবারেল এবং ইনটলারেন্ট একটা সংস্কৃতি ও সমাজ আমরা ডেভেলপ করেছি। এর চাইতে নেতিবাচক দৃশ্য আমাদের সামনে আসে না।’
ব্যারিস্টার মওদুদ সরকারি খরচ ও সুবিধা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘একদলীয় নির্বাচনী প্রচারণা’ এবং সরকারের ‘লুটপাট-দুর্নীতি’র কঠোর সমালোচনা করেন তিনি।
আয়োজক সংগঠনের সহ-সভাপতি আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, কেন্দ্রীয় নেতা শাহ আবু জাফর, মিজানুর রহমান মিজান প্রমুখ।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন