ক্ষমতাসীন সরকারকে ফ্যাসিস্ট এবং দানব আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আবারো জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, পাকিস্তান আমলে আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে ১২ বছর আন্দোলন হয়েছে। স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ বছর আন্দোলন হয়েছে। সেসময় একটি জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা হয়েছিল বলেই তাদেরকে ক্ষমতা থেকে নামানো গেছে। আজকে তাই বর্তমান ফ্যাসিস্ট এবং দানব সরকারকে হটাতে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল শ্রেণীপেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার কাজ করছি। সবাইকে এই ঐক্য গড়ার কাজ করতে হবে।
শনিবার (২৪ মার্চ) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে সম্মিলিত পেশাজীবী সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের ব্যানারে 'বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও গণতন্ত্র পূণরুদ্ধারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে ভেবেচিন্তে আন্দোলন করতে হচ্ছে। বিএনপি বিপ্লবী দল নয়। বিএনপির উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। নির্বাচনের মাধ্যমেই রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে চায় বিএনপি। আমরা দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করে সামনে এগিয়ে যেতে চেষ্টা করছি।
তিনি দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা-মামলা প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৭৮ হাজার মামলা ছাড়িয়ে গেছে। আসামী করা হয়েছে ১৮ লাখের বেশি নেতাকর্মীকে। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নামেও মামলা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে দেশের মানুষ এই সরকারের বিরুদ্ধে অতীষ্ঠ। মানুষের কোনো নিরাপত্তা নেই। কথা বলার স্বাধীনতা নেই। অর্থনৈতিক নিরারপত্তা নেই। এ অবস্থা চলতে পারে না। আজকে দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় শত্রু হলো দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এজন্যই তাকে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় সাজা দিয়ে নির্জন কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে। যা অন্যায় এবং বেআইনি।
হতাশ হওয়ার কিছু নেই জানিয়ে মির্জা ফখরুল নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আজকে হতাশ হওয়ার কিছুই নেই। এখন হয়নি তো সামনে হবে। এটা তো বিজ্ঞান। হতেই হবে। আমরা বিএনপি আগের চেয়ে আরো বেশি ঐক্যবদ্ধ। আমাদের মাঝে কোনো বিভেদ নেই। ঐক্যবদ্ধভাবেই আমাদের দলের নেত্রীর জন্য শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসছি। আজকে এই আন্দোলনে শুধু বিএনপি নয় পেশাজীবীদেরকেও ভূমিকা রাখতে হবে। যারা বিগত আন্দোলনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার ফ্যাসিস্ট। তারা পুলিশ ও দলীয় গুণ্ডা দিয়ে বিরোধী দলকে নিপীড়নের মাধ্যমে দেশ চালাচ্ছে। বিচার বিভাগের মাধ্যমে অনেক কুকর্ম করেছে এই সরকার। ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র হরণ করা হয়েছে কৌশলে। যে দেশে প্রধান বিচারপতিকে চোর আখ্যা দিয়ে দেশত্যাগ করানো হয় সেদেশে আবার বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কীসের?
তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, যারা অন্যায় করেছে তাদের কাউকে ছাড় দেয়া যাবে না। চিহ্নিত করে রাখুন, সবার বিচার করা হবে।
ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন খানের সভাপতিত্বে বিএনপির সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমের পরিচালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা দেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ড. তাজমেরী এস ইসলাম, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব এম আবদুল্লাহ প্রমুখ।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন