একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারা মুক্তি অনেকটাই অনিশ্চিত! বিভিন্ন মামলা মোকাবিলা এবং আইনি প্রক্রিয়া পার করতেই অনেক সময় পেরিয়ে যেতে পারে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়া কারাগারে গেলেও তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা রয়েছে। জিয়া অরফানেস ট্রাস্ট মামলার বিচারের রায়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার ৫ বছরের সাজা হয়েছে। এখন তিনি কারাগারে রয়েছেন। এই রায়ের পর উচ্চ আদালত জামিন দিলেও আপিল বিভাগ থেকে ওই জামিন ৮ মে পর্যন্ত স্থগিত হয়ে গেছে। পরবর্তী ধাপগুলোও আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে পার হতে আরও সময় পেরিয়ে যাবে। পাশাপাশি অন্য যে মামলাগুলো রয়েছে সেগুলোর কার্যক্রমও চলতে থাকবে।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা, বাসে পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা মামলা, মানবতাবিরোধীদের মদদ দেওয়ার মামলা, ভুয়া জন্মদিন পালন মামলাসহ আদালতে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের আছে। এই মামলাগুলোর কার্যক্রমও ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে।
সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে সব মামলা রয়েছে তার আইনি প্রক্রিয়া শেষ হতে অনেক সময় লেগে যাবে। শুধু তাই নয়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজার রায়ের পর যে আপিল হয়েছে সেই আপিলের আইনি প্রক্রিয়া শেষ হতেও সময় লাগতে পারে।
আগামী ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার জামিন হলেও এই সময়ের মধ্যে হবে কি না সেটা নিশ্চিত নয়।
সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের ওই নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন কি পাবেন না সেটা আওয়ামী লীগ ও সরকারের দেখার বা বিবেচ্য বিষয় নয়। যে কোনো পরিস্থিতিতে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আওয়ামী লীগ। খালেদা জিয়া ছাড়া এই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবেকি নেবে না তা নিয়েও আওয়ামী লীগ কোনো চিন্তা করছে না। নির্বাচনের সময় খালেদা জিয়া জেলে থাকলে সেটা আওয়ামী লীগের জন্য নেতিবাচক কোনো প্রভাব পড়বে না বলে তারা মনে করছেন। বরং দুর্নীতির দায়ে খালেদা জিয়ার সাজা হয়েছে এবং তিনি কারা ভোগ করছেন। নির্বাচনে এই বিষয়টি আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক হবে। নির্বাচনী প্রচারে খালেদা জিয়ার দুনীতির বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসে মানুষের মধ্যে তুলে ধরা হবে। বিএনপির বিরুদ্ধে এটাকেই বড় রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করবে আওয়ামী লীগ।
সরকার ও আওয়ামী লীগের ওই নীতিনির্ধারকদের মতে, দুর্নীতির মামলা সাজা হওয়ায় খালেদা জিয়া কারাগারে আছেন। মুক্তি পেতে হলে তাকে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আগাতে হবে। আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্তি না হলে তার যে সাজা হয়েছে সেটা ভোগ করেই বের হতে হবে। নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়ার মুক্তি হওয়া, না হওয়ার বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই অগ্রসর হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, খালেদা জিয়ার জামিন, মুক্তি সবই আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হবে। তবে এই আইনি প্রক্রিয়া শেষ হতে অনেক সময় লাগবে। ফলে খালেদা জিয়ার জামিন বিলম্বিত হতে পারে। নির্বাচনের আগে তার জামিন হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন