ভিডিও >> তারেক রহমানকে নিয়ে রাজনীতিতে উত্তাপ, সরকার ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি বক্তব্য
23 Apr, 2018
হঠাৎ দেশের রাজনীতিতে তারেক রহমানকে নিয়ে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। সরকার আর বিএনপির পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে রাজনৈতিক অঙ্গন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাগরিকত্ব নিয়ে সরকারি দলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা মন্তব্য করলে পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করে। এ নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকেও কড়া জবাব দেয়া হচ্ছে। চায়ের স্টল থেকে শুরু করে দেশের সর্বত্র তারেক রহমানকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাগরিকত্ব বিতর্কের মধ্যে সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম অভিযোগ করে বলেন, দেশে ফেরার ইচ্ছে নেই বলেই হয়তো পাসপোর্ট ফিরিয়ে দিয়েছেন।
‘২০০৮ সালে তিনি যখন লন্ডনে যান তখন স্মার্ট কার্ডও ছিল না। পাসপোর্ট তার একমাত্র পরিচয়পত্র ছিল। সেই পাসপোর্ট তিনি সারেন্ডার করেছেন। তিনি আবেদনও করেননি নতুন পাসপোর্টের জন্য।’
যদি নতুন পাসপোর্টের আবেদন জানিয়ে থাকেন তাহলে তার রিসিপ্ট কপি দেখানোর আহ্বান জানিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন,‘বিদেশে থেকে পাসপোর্ট ফেরত দেওয়ার অর্থ হলো তিনি দেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন। বিএনপি বলে আসছে তিনি চিকিৎসার জন্য সেখানে অবস্থান করছেন। এটা হাস্যকর।’
তারেক রহমান পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য জমা দিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে প্রশ্নকারী সাংবাদিককে বলেন, ‘আপনাকে কী বললাম, আপনি তো বুঝলেন না। সে (তারেক রহমান)আবেদনও করেনি যে আমি রিনিউ করতে চাই। যদি করে থাকে আমি উল্টো চ্যালেঞ্জ দিলাম জাতীয়তাবাদী দলকে আপনারা সে কাগজ দয়া করে দেখান, যদি রিসিপ্ট কপি থাকে দেখান।’
বিএনপির লিগ্যাল নোটিশের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো নোটিশ পাইনি। আই ওয়েলকাম ইট। এটা শুনে ভালো লাগছে যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বাংলাদেশের আদালতে আশ্রয় নেয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে। কিন্তু সেই সঙ্গে আমার এই প্রশ্ন, এই আদালত তারেক রহমানকে খুঁজে বেড়াচ্ছে সেই আদালতের আশ্রয় নিলে আদালত তাকে আশ্রয় দেবে কিনা?’
নাগরিকত্ব ছেড়ে দিতে হলে কি কোনো আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয় জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন,‘আমি জানি না। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব অতদূর পড়ে নাই, ওটা আইনমন্ত্রীর বিষয়।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যতদূর জানি ২০১৪ সালের ২ জুনের পর তারেক রহমান আন্তর্জাতিক কোনো সফর বা অন্য কোনো দেশে যাননি।’
তিনি আরও জানান,‘বিদেশে থাকা অবস্থায় মেয়াদ শেষে হলে তো দেশে ফেরত আসতে পারছেন না।’
বাংলাদেশের পাসপোর্টের জন্য আবেদন করলে কী করবে? এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আইনানুগভাবেই করবে।
তিনি আর নাগরিক নন এমন প্রশ্নে জাবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনার একটাই ন্যাশনাল আইডেনটিফিকেশন ছিল সেটা আপনি হস্তান্তর করে দিয়েছেন চার বছর আগে।’
তারেককে দেশে ফেরত আনার প্রক্রিয়া সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার মতো পরিস্থিতি হলে তাকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট দেয়া হবে। যাদের পাসপোর্ট নেই ,বিদেশে অনেকের পাসপোর্ট হারিয়ে যায়, অনেকে ফেলে দেয়,অন্যভাবে আরেক দেশে অবৈধভাবে থাকার জন্য অনেক কিছু করে। তাদের কে আমরা টেম্পোরারি ওয়ানওয়ে ট্রাভেল ইস্যু করি। আর সেটা সময় বলবে।’
প্রসঙ্গত, ‘তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন’— এমন বক্তব্য দেয়ায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এছাড়া প্রতিমন্ত্রীর ওই বক্তব্য প্রকাশ করায় দুটি দৈনিকের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সোমবার দুপুরে তারেক রহমানের পক্ষে বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল রেজিস্ট্রি ডাকযোগে প্রতিমন্ত্রী, দৈনিক কালের কণ্ঠ ও বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদককে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
নোটিশে ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন’—এ খবর ‘ভিত্তিহীন’দাবি করে তা প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে।
আগামী ১০ দিনের মধ্যে বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেছেন, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এ বক্তব্য রাখা হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে হেয় করতেই এ বক্তব্য, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য। ১০ দিনের মধ্যে বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় তাদের সবার বিরুদ্ধে দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা করা হবে।’
গত ২১ এপ্রিল যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন।
তিনি বলেন, ‘লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে সবুজ পাসপোর্ট জমা দিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন তারেক রহমান।’
তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘সেই তারেক রহমান কীভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বপালন করেন?’ এ বক্তব্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বরাত দিয়ে ২৩ এপ্রিল সোমবার দৈনিক কালের কণ্ঠ ও দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত হয়।
এদিকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী যে ডকুমেন্টের (তথ্য) ভিত্তিতে তারেক রহমানের নাগরিকত্ব নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন, তা দৈনিকে প্রকাশ করা হয়েছে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের ফেসবুক পেইজে ওই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
২০১৪ সালের জুন মাসের ২ তারিখে ব্রিটিশ হোম অফিস (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট) থেকে বাংলাদেশ দূতাবাসে একটি চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে তারেক রহমান, স্ত্রী জোবায়দা রহমান, মেয়ে জাইমা রহমান ও মঈনুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির পাসপোর্ট হস্তান্তর করার বিষয় উল্লেখ করা হয়।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে সবুজ পাসপোর্ট জমা দিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন তারেক রহমান।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ওই বক্তব্য রবিবার কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এরপরই রাজনৈতিক অঙ্গনে আবার উত্তেজনা দেখা যায়।
সোমবার দুপুরে তারেক রহমানের পক্ষে বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল রেজিস্ট্রি ডাকযোগে প্রতিমন্ত্রী, দৈনিক কালের কণ্ঠ ও বাংলাদেশে প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদককে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
নোটিশে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেছেন, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এ বক্তব্য রাখা হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে হেয় করতেই এ বক্তব্য, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য। ১০ দিনের মধ্যে বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় তাদের সবার বিরুদ্ধে দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা করা হবে।’
এদিকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পাসপোর্ট হাইকমিশনে জমার বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী যে উড়ো খবর দিয়েছেন, তার জন্য আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।
সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এ নেতা বলেন, আপনারা ক্ষমতায় আছেন, হাইকমিশন তো সরকারের নিয়ন্ত্রণে। তাহলে তারেক রহমান পাসপোর্ট জমা দিয়ে থাকলে সেটি প্রদর্শন করে সবাইকে দেখান। কই, সেটি তো পারলেন না।
‘প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন হওয়ার জন্য রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলে মন্ত্রিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা-আত্মা বিক্রির সমতুল্য,’ যোগ করেন তিনি।
রিজভী আরও বলেন, বিদেশে বাংলাদেশ হাইকমিশনে তারাই পাসপোর্ট জমা দেন, যারা বিদেশিদের বিয়ে করে সে দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। বিএনপি ও জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
অন্যদিকে তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেননি বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
তিনি বলেন, লন্ডন, যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমা বিশ্বে কেউ অবৈধভাবে বসবাস করতে পারে না। চিকিৎসার জন্য তিনি বিগত ৯ বছর ধরে ব্রিটেনে আছেন এবং বৈধভাবেই তিনি তার পরিবার নিয়ে সেখানে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিয়েই তিনি বৈধভাবে ব্রিটেনে বসবাস করছেন।
তারেক রহমান ব্রিটেনের নাগরিকত্ব নিয়েছেন কিনা এই প্রশ্নের জবাবে তার আইনজীবী বলেন, নাগরিকত্ব গ্রহণের তো প্রশ্নই আসে না। তিনি বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ একটি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। অতএব, অন্য কোনো দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণের প্রশ্নই আসে না। তিনি ওই দেশের অভিবাসন আইন অনুযায়ী বৈধভাবে ওখানে আছেন। চিকিৎসা শেষ হলে তিনি আবার দেশে ফিরে আসবেন।
It is illegal to disclose someones' personal information to public without permission. You are suppose to be minister. You can not behave like a fourth class Kerani. You are trying to score a political point. In the process you , you are destroying the administrative process. No wonder "amlas" are more power than ministers.
It is sad PM has found all the "podolehi idiots" for ministers.
পাঠক মন্তব্য
It is illegal to disclose someones' personal information to public without permission. You are suppose to be minister. You can not behave like a fourth class Kerani. You are trying to score a political point. In the process you , you are destroying the administrative process. No wonder "amlas" are more power than ministers. It is sad PM has found all the "podolehi idiots" for ministers.
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন