নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধির ‘কোনও বিদ্যমান সংসদ সদস্য যে কোনও পর্যায়ের নির্বাচনী প্রচারণা করতে না পারার’ বিষয়টিকে বাধা হিসেবে দেখছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাসান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, খুলনা সিটিতে প্রচার-প্রচারণায় বিএনপি তাদের শীর্ষ নেতাদের পেয়েছে অথচ আওয়ামী লীগ সেটা পায়নি।
বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩৭তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। স্বাধীনতা পরিষদ নামের একটি সংগঠন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
হাসান মাহমুদ বলেন, ‘আওয়ামীলীগের কোনও এমপি-মন্ত্রীরা সেখানকার (খুলনায়) প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনে এ ব্যাপারে দাবি জানিয়েছিলাম।’
‘নির্বাচন কমিশনে এ ব্যাপারে সভা হয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি। যদিও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি, তবে সেটি তারা পর্যালোচনা করে বলেছেন আমরা যে দাবি দিয়েছি সেটা যোক্তিক।’
‘তবে নির্বাচন কমিশন তাদের যে আচরণবিধি বলবৎ রেখেছে সেটি আওয়ামী লীগের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ। এর জন্য আওয়ামী লীগ খুলনায় সঠিকভাবে প্রচারণা করতে পারেনি। বিএনপি সেখানে বাড়তি সুবিধা ভোগ করেছে।’
সদ্য সমাপ্ত খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ বিগত অন্যান্য সিটি করপোরেশন ও উপনির্বাচনগুলোতে আওয়ামী লীগ সমর্থীতে প্রার্থীদের জন্য সরকার দলীয় কোনও মন্ত্রী বা এমপি তাদের স্ব-স্ব এলাকায় নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধির বাধার কারণে প্রচারণায় নামতে পারেননি। যা আওয়ামী লীগের বিগত নির্বাচনগুলোতে প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করেন হাসান মাহমুদ।
পার্শবর্তী দেশ ভারতের উদাহরণ টেনে হাসান বলেন, ‘যেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীসহ সকল মন্ত্রীরা, মুখ্যমন্ত্রীরা সব নির্বাচনে তার দলের পক্ষ থেকে প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারে, সেখানে বাংলাদেশে কেন এমপিরা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না?’
খুলনার সিটি নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন ছিল এবং এ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য তফসিল ঘোষণার পর থেকে বিএনপি প্রথম থেকেই সবসময় সচেষ্ট ছিল বলেও মন্তব্য করেন হাসান মাহমুদ।
‘তাদের প্রতিদিনের সকালের কাজ ছিল খুলনা সিটি নির্বাচন নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করা। খুলনা সিটি নির্বাচনে কোনও ধরণের গোলযোগ আগেও হয়নি, এখনও হয়নি। অসম্ভব সুন্দর নির্বাচন হয়েছে।’
প্রায় এক লাখ ভোটের কাছাকাছি ব্যবধানে খুলনা নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হেরেছে বলেই বিএনপি এখন নানান রকমের অভিযোগ করছে বলে মনে করছেন হাসান।
‘তাদের প্রার্থী মঞ্জু সাহেবও নির্বাচনের আগে বলেছিলেন- পরিস্থিতি ভালো, শান্ত, শান্তিপূর্ণ। এখন তারা যে অভিযোগগুলো দিচ্ছে, তার মানে কেউ যখন নাচতে না জানে তখনই উঠান বাঁকা।’
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করার প্রত্যয় জানিয়ে বিরোধী দল বিএনপির উদ্দেশ্যে হাসান বলেন, ‘তাদের এই অব্যাহত পরাজয় থেকেও রংপুর সিটি নির্বাচনে তৃতীয় হওয়ার পরও এখন খুলনা সিটিতে দ্বিতীয় হয়েছে। তার মানে আপনাদের উন্নতি হয়েছে, এতে আপনাদের খুশি হওয়ার কথা।’
ভবিষ্যত নির্বাচনে ভালো করার চেষ্টা করার জন্য বিএনপিকে পরামর্শও দেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।’
(ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন