খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে সংসদের প্রধান বিরোধীদল জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী এসএম শফিকুর রহমান ওরফে মুশফিক ‘লাঙ্গল’ প্রতীকে পেয়েছেন মাত্র ৪৮৯ ভোট। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে জাপা চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ বুধবার রংপুর থেকে ঢাকায় ফিরেই জামানত হারানো শফিকুর রহমানকে দল থেকে বের করে দিয়েছেন।
একইসঙ্গে তিনি খুলনা মহানগর জাপার আহ্বায়ক কমিটিও ভেঙে দিয়েছেন। দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পার্টির ভোট বিপর্যয়ের জন্য মহানগর কমিটির ব্যর্থতাকে দায়ী করে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে খুলনা মহানগর জাপার সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি ঘোষণা করা হবে।
খুলনার নির্বাচনে যেখানে বিজয়ী মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক ‘নৌকা’ প্রতীকে এক লাখ ৭৬ হাজার ৯০২ এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে এক লাখ আট হাজার ৯৫৬ ভোট পেয়েছেন; সেখানে এরশাদের দলের প্রার্থী ‘লাঙ্গল’ প্রতীকে পাঁচশ’ ভোটও পাননি।
এমনকি নির্বাচনে চরমোনাই পীরের ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী মুজাম্মিল হক ‘হাতপাখা’ প্রতীকে পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৮৫৩ ভোট। লাঙ্গলের প্রাপ্ত ভোট নিয়ে ক্ষুব্ধ এরশাদ গতকাল তার বারিধারার বাসায় দলের কয়েক নেতাকে নিয়ে বৈঠক করেন।
জাপার মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু ও মেজর (অব.) খালেদ আখতার এতে উপস্থিত ছিলেন। খুলনার দায়িত্বপ্রাপ্ত ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়কেও বৈঠকে ডেকে নেন এরশাদ। বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে এরশাদ প্রচণ্ড বিরক্তি প্রকাশ করেন। দলের নির্দেশনার বাইরে গিয়ে মেয়র পদে একজন বিতর্কিত লোককে প্রার্থী করা এবং নির্বাচনের সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কে দলকে ভুল ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দেয়ায় সংশ্লিষ্টদের ভর্ত্সনা করেন এরশাদ।
জাপার দায়িত্বশীল একাধিক নেতা জানান, খুলনা সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে দলের উপযুক্ত প্রার্থী না থাকায় এরশাদ কাউকে মনোনয়ন দিতে চাননি। সেক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত ছিল শেষ মুহূর্তে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীকে সমর্থন দেবে জাপা। তবে দু’একজন নেতা তখন বলেছিলেন খুলনায় জাপার অবস্থান ভালো, শফিককে প্রার্থী করা হলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। কিন্তু ভোটের ফলাফলে প্রমাণ হয়েছে, ওই দু’এক নেতা দলকে ভুল বুঝিয়েছিল।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে দলের প্রেসিডিয়ামের একাধিক নেতা জানান, পরাজিত ও বিতর্কিত শফিককে দলে ভিড়ানোর নেপথ্যেও ওই দু’এক নেতা ভূমিকা রেখেছেন। খুলনা মহানগর নেতা হত্যার আসামি শফিককে ভুল পরিচয়ে জাপায় যুক্ত করানো হয়েছিল। তাছাড়া শফিকের অতীতের নানা নেতিবাচক কর্মকাণ্ড নিয়ে খুলনায় সমালোচনা রয়েছে।
সূত্রঃ ইত্তেফাক
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন