জনগণ রাস্তায় নামলেই কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন বলে মন্তব্য করেছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। বিরোধীদলের কাছে কখনো অস্ত্র-বোমা ছিল না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হাতে একটা লাঠি আর ইটের টুকরা ছিল। সেটা দিয়েই আইযুব খানের স্বৈরশাসন, ইয়াহিয়া খান, এরশাদকে পরাজিত করেছি। পরাজিত করেছি আরও অনেক শাসকগোষ্ঠীকে। আজকের পরিস্থিতিও ভিন্ন নয়। রাস্তায় না নামলে কোনো আন্দোলনই সফল হবে না। আর রাস্তায় নামার নেতৃত্ব বিএনপিকেই দিতে হবে।’
আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক মুক্ত আলোচনায় এ কথা বলেন আবদুল্লাহ আল নোমান। খালেদা জিয়া, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু ও খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের মুক্তির দাবিতে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’ নামের একটি সংগঠন।
নোমান বলেন, ‘জনসাধারণ যখন রাস্তায় নামবে তখন আমাদের নেত্রী বের হবেন। আমরা জয়লাভ করতে পারব। আমরা ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনব, খুলনা মার্কা নির্বাচন আর হতে দেব না। এ জন্য এই নির্বাচন কমিশনকে বাতিল করে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ইস্তফা দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। এটা আমাদের লক্ষ্য-আন্দোলনের একটা অংশ।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের কথা কম, কাজ অনেক বেশি। এটা আমরা সকলে অনুভব করছি। কিন্তু প্রয়োগে আছি কি না, জানি না। আলোচনারও বেশি দরকার নেই। এক দফা এক দাবি হাসিনা তুমি কবে যাবি।’
খুলনার নির্বাচনে জালভোটের পরিবর্তে ভোটদখল স্তরে চলে গেছে উল্লেখ করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘এই অবস্থাকে সহযোগিতা করছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ। সরকার যা বলবে, সেটাই কমিশন করবে। কমিশনের আইনে এবং সংবিধানে কমিশনের যে শক্তি, নির্বাচন পরিচালনায় তারা যে নেতৃত্বপ্রদানকারী, সেটা তারা করছে না। তারা সরকারের লেজুরবৃত্তি করছে।’
আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘কিছুদিন আগে আপনারা দেখেছেন, একটা আইন প্রণীত হয়েছে, যখন মনে করবে দুর্যোগ আসছে, সমস্যা হচ্ছে, তখন সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে সমস্ত বাহিনী ও অরগানগুলো সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। তখন তারা যে ডিসিশন নেবে, সেটা কার্যকর হবে। এটার ডিসিশনটা দেবে দেশের প্রধান নির্বাহী অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী তার যে সাংগঠনিক ক্ষমতা আছে এগুলো ছাড়াও তিনি যেকোনো সময় আমাদের ওপরে সাংবিধানিকভাবে সেটা চাপিয়ে দিতে পারবেন।’
নোমান বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, আওয়ামী লীগ উলঙ্গ হয়ে গেছে। এটা বলার কারণ, যারা গণতন্ত্রকে ধংস করে লজ্জাবোধ করে না। তারা লজ্জাহীন, তারা উলঙ্গ। কাজেই আজকের এই উলঙ্গ সরকারকে শায়েস্তা করার জন্য ভোটাধিকার বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলন সংগ্রামের কোনো বিকল্প নাই। খালেদা জিয়া, শফিউল বারী বাবু অথবা শিমুল বিশ্বাস-এদের কারাগারে নিয়েছে, কারাগার থেকে বের করার জন্য নয়। কারাগারে নিয়ে যায় শাসক। আর বের করে জনতা। আজকে সেই জনতা নেত্রীকে বের করবে।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কেএম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে ও দপ্তর সম্পাদক গোলাম সরোয়ারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব প্রমুখ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন