জাতীয় নির্বাচনের বছরে বিএনপির তিন নেতার ‘গোপনে’ ভারত সফর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের দুই নেতা। তাদের একজন বলেছেন, ‘বিএনপি নাকে খত দিয়ে এসেছে।’ আরেকজন বলেছেন, ‘বিএনপি ভারতের কাছে ক্ষমা চেয়ে এসেছে।’
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনায় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অতীতের রাজনীতিতে বিএনপির ভুল হয়েছে। সে জন্য তারা ভারতের কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য গিয়েছিল।’
খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, সরকারে থাকাকালে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্ত্রের ট্রানজিট আর সংখ্যালঘু নির্যাতনের জন্য নাকে খত দিয়ে এসেছেন বিএনপির তিন নেতা।
‘নতুন সম্পর্কের বার্তা’ নিয়ে সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু এবং হুমায়ুন কবির ভারত সফর করে এসেছেন। ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ এই সফরের বিষয়ে আগেভাগে গণমাধ্যমকে কিছু জানানো হয়নি আর ভারতীয় গণমাধ্যম ফাঁস করার পর এ নিয়ে বিএনপির নেতারাও কিছু বলছেন না।
ভারতের দৈনিক দ্য হিন্দু জানিয়েছে, বিএনপি নেতারা ভারত সরকারের প্রভাবশালী বিভিন্ন ব্যক্তি ও থিংক ট্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। বলেছেন, ৮০ এবং ৯০ দশকের ‘ভুল’ রাজনীতি ভুলে তারা নতুন সম্পর্ক গড়তে চান।
বিএনপি সরকারের আমলে বাংলাদেশে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী এবং বেশকিছু জঙ্গি সংগঠন আস্তানা গেড়ে ভারতে আক্রমণ চালিয়েছে বলে দেশটির অভিযোগ ছিল। অন্যদিকে উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী বহু নেতাকে ভারত সরকারের হাতে তুলে দেয়ার কথা নিজেই জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিএনপির প্রতিনিধি দলের সদস্য ও তারেক রহমানের উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির ‘দ্য হিন্দু’কে বলেন, ‘আমরা পেছনের সব ভুলে সামনে এগোতে চাই। আর আশি নব্বই দশকের রাজনীতি এখন অতীত।’
আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে জয়লাভ করার কোনও সম্ভাবনা বিএনপির নেই, তাই তারা দেশের পানি ঘোলা করতে চায়। আর এর জন্যই গোপনে ভারত সফরে গিয়েছিল তারা।’
দেশের রাজনীতির মাঠে পানি ঘোলা করার জন্য গোপনে কেবল ভারত সফর নয়, পাকিস্তানের সঙ্গেও যোগাযোগ চলছে মন্তব্য করেন হাছান মাহমুদ। বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচন বানচাল করার সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই তারা তাদের পরম বন্ধু পাকিস্তানকে নিয়ে বহির্বিশ্বের নেতাদের কাছে নালিশ করছে।’
কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির সময় ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জন্যে যে ১০ ট্রাক অস্ত্রের ট্রানজিট দিয়েছিল তখনকার সরকার প্রধান। তারা এমন কাজ আর করবে না বলে নাকে খত দিয়ে এসেছে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে ভারত বিরোধিতা করবে না, তারা সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন করবে না বলে নাকে খত দিয়ে এসেছে।’
এক এগারোর কুশীলব এখনো সক্রিয় দাবি করে সতর্ক থাকারও তাগাদা দেন খাদ্যমন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি পীযুষ বন্দোপাধ্যায়, কবি রবীন্দ্র গোপ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা, কৃষকলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ এ সময় বক্তব্য রাখেন।
(ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন