বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিগত বছরগুলোর মতো নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের চিরচেনা দৃশ্য দেখা যাবে না। এবার ভিন্ন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তাকে কারাগারেই ঈদ করতে হচ্ছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় জামিন পেলেও অন্য মামলায় এখনো জামিন না হওয়ায় নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে কাটবে তার ঈদের দিনগুলো।
ঈদের আগেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেছে তার দল। গতকাল সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। কারাগারে এটি খালেদা জিয়ার প্রথম ঈদ নয়, ওয়ান-ইলেভেনের পর গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ঈদ করতে হয়েছিল বিএনপিপ্রধানকে। ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার হন। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তিনি জামিনে মুক্তি পান। এ সময়ের রোজা ও কোরবানির ঈদ কারাগারে করতে হয়েছে তাকে।
by Taboola Sponsored Links You May Like
Play this Game for 1 Minute and see why everyone is addicted
Delta Wars
This Woman Reads 100 Books In A Month
Blinkist
গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় বেগম জিয়াকে ৫ বছরের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। ১৬ মে আপিল বিভাগ তাকে জামিন দেন। তবে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় মুক্তি পাননি তিনি।
৭৩ বছর বয়সেও কারাগারে ঈদ করবেন বেগম জিয়াÑ বিষয়টি দলের নেতাকর্মীদের কাছে খুবই বেদনাদায়ক। এর ওপর বিএনপি নেত্রীর অসুস্থতার খবরেও নেতাকর্মীদের ঈদের আনন্দের মাঝে দুঃসংবাদ হয়ে দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি বেগম জিয়া মাইল্ড স্ট্রোক করেছেন বলে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন। তার চিকিৎসার জন্য ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে দলটি।
ওয়ান-ইলেভেনের সময় কারাগারে থাকাকালে মহিলা দল নেত্রীরা দলীয়প্রধানকে শাড়ি উপহার দিয়েছিলেন। সেই সময়ের কথা স্মরণ করে এমন জানিয়েছেন মহিলা দলের এক নেত্রী।
খালেদা জিয়া কারাগারে থাকায় এবার বিএনপি নেতাদের ঈদ কাটবে ভিন্নভাবে। প্রিয় নেত্রীকে কারাগারে শুভেচ্ছা জানাতে ঈদের দিন সাক্ষাৎ চেয়ে আবেদন করেছেন বিএনপি মহাসচিবসহ জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কথা জানান।
খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে এবার থাকছে ঈদ শুভেচ্ছাবিনিময়। নেতাকর্মীরা জেলগেটে যাবেন। এ বিষয়ে রিজভী আহমেদ বলেন, আমরা প্রত্যেকে বেদনার্ত, আমাদের মনের মধ্যে কষ্ট। যাকে কেন্দ্র করে ঈদের সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছাবিনিময় অনুষ্ঠান হতো, এবার সেটি হবে না। তিনি বলেন, ঈদ একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানÑ খুশির উৎসব। আমাদের মধ্যে ঈদের সেই আনন্দ নেই, খুশিও নেই। ঈদের দিন সকালে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ নেতাকর্মীরা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করবেন। সেখান থেকে জেলগেটে যাবেন। আমাদের নেতাকর্মীরা অনেকেই বলেছেনÑ নেত্রীর প্রতি মনের টানে তারা জেলগেটে যাবেন।
প্রতিবছরই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ঈদের দিন কূটনীতিক, গণমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছাবিনিময় করতেন। তবে ঈদের দিন খালেদা জিয়ার আত্মীয়স্বজনরা কারাবিধি অনুযায়ীই সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন। তারা সকালেই কারাগারে যাবেন বলে জানা গেছে।
কারা সূত্র বলছে, ঈদের দিন কারাবন্দিদের উন্নতমানের খাবার পরিবেশ করা হয়। খালেদা জিয়াও সাধারণ বন্দিদের মতো বিশেষ খাবার পাবেন। তবে কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলে পরিবারের নেওয়া খাবার খেতে পারবেন তিনি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন