সাবেক ছাত্রনেতা রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদে থাকলেও মূলত দপ্তরের পুরোটা দেখভাল করেন তিনি। দলের চরম দুঃসময়েও যখন কথা বলার কোনো নেতার দেখা মেলে না তখনও নানা ইস্যুতে সরব থাকেন তিনি।
এ নিয়ে অবশ্য দলের ভেতরে-বাইরে সমালোচনাও আছে। অনেকে তাকে ‘নয়াপল্টনের স্থায়ী বাসিন্দা’ বলে কটাক্ষ করেন। তবে সব সমালোচনা উপেক্ষা করে অফিসেই থাকছেন তিনি। গত প্রায় সাড়ে চার মাস ধরে একই জায়গায় দিন কাটছে এই নেতার।
রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তিন তলার ছোট্ট একটি কক্ষে রিজভীর বসবাস। এর বাইরে দলের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন, ফাঁকে ফাঁকে কার্যালয়ের ভেতরেই হাঁটাহাঁটি করেন। নেতাকর্মীরা এলে সাক্ষাৎ দেন।
এভাবেই প্রায় ১৪০ দিন ধরে কার্যালয়ে অবস্থান করছেন স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রাখা এই সাবেক ছাত্রনেতা। তবে অনেকেই বলাবলি করেন, গ্রেপ্তার এড়াতে স্বেচ্ছায় এমন ‘অবরুদ্ধ’ হয়ে আছেন তিনি।
জানা যায়, গত জানুয়ারির ২৮ তারিখ থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আছেন রিজভী আহমেদ। এর মধ্যে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শুধু কার্যালয়ের সামনে শীতের সকালে সূর্যোদয়ের আগে ঝটিকা মিছিল করেছিলেন দুবার। একবার দলীয় কর্মসূচিতেও কার্যায়ের মূল ফটকের সামনে বের হয়েছিলেন রিজভী। কেন্দ্রঘোষিত কালো পতাকা মিছিল চলাকালে কার্যালয়ের তিন তলার বারান্দা দিয়ে পতাকা উড়িয়েছিলেন একবার। এছাড়া কার্যালয়ের অভ্যন্তরেই সময় কাটছে তার।
রিজভী জানিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়া কারামুক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি কার্যালয়েই থাকবেন। এখানেই কাটবে তার ঈদ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসুর সাবেক ভিপি রুহুল কবির রিজভী ছাত্রদলের নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজশাহী রেলস্টেশনে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। তখন থেকেই নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন তিনি। মাঝে মাঝে পায়ে প্রচণ্ড ব্যথায় ভোগেন রিজভী। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে পড়াশোনা শেষে টানা ২১ বছর ঢাকায় বসবাস করছেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাগারে যান বিএনপি চেয়ারপারন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি কারাগারে যাওয়ার ১১ দিন আগে অর্থাৎ গত ২৮ জানুয়ারি থেকে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান করছেন তিনি। প্রতিদিনই একাধিকবার সংবাদ সম্মেলন করে কড়া ভাষায় দলীয় বক্তব্য তুলে ধরেন।
দৈনন্দিন কাজকর্মের বিষয়ে রিজভী জানান, খুব ভোরেই ঘুম থেকে জাগার চেষ্টা করেন। এরপর তিন তলার সংবাদ সম্মেলন কক্ষে অনেকক্ষণ হাঁটাহাঁটি করেন। কিছুক্ষণ পর ফ্রেশ হয়ে সকালের নাশতা করেন তিনি। এরপর রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত দিনের সময় পার হয় দলীয় কর্মকাণ্ডে। এছাড়াও বড় একটি সময় পার হয় উপন্যাস আর রাজনৈতিক বই পড়ে।
খাওয়া দাওয়ায় নেই তেমন কোনো চাহিদা। কার্যালয়ের স্টাফদের জন্য যে রান্না হয় তাতেই সারিয়ে নেন খাবারের পর্বটা। তবে মাঝে মধ্যে পরিবারের সদস্য ও নেতাকর্মীরাও কিছু খাবার নিয়ে আসেন।
এই সময়টুকুতে স্ত্রী আঞ্জুমান আরা আইভী ও পরিবারের অন্য সদস্যদের খুবই মিস করেন বলেও জানান তিনি।
(ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন