আগামী ৩০ জুলাই যে তিনটি মহানগরে ভোট হতে যাচ্ছে, তার মধ্যে রাজশাহীতে মেয়র পদে জামায়াতের প্রার্থী ঘোষণা করা আছে। তবে তফসিল ঘোষণার আগেই প্রার্থী ঘোষণা করলেও এখন প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে দোটানায় নিবন্ধন হারানো স্বাধীনতাবিরোধী দলটি।
রাজশাহী জামায়াতের স্থানীয় নেতারা বলছেন, তারা রাজশাহী সিটি নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই করে রেখেছে। শরিক দল হিসেবে প্রতিটি সিটি করপোরেশনে বারবার তারা বিএনপিকে ছাড় দিচ্ছেন। কিন্তু তাদেরকেও একটি না একটিতে বিএনপির ছাড় দেয়া উচিত।
রাজশাহী মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির আবু ইউসুফ সেলিম বলেন, ‘শুরু থেকেই আমরা একটিমাত্র সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদ চেয়ে আসছি। এর মধ্যে আমাদের প্রথম পছন্দ রাজশাহী, দ্বিতীয় সিলেট। সে অনুযায়ী, রাজশাহীতে আমরা একজন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছি। নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিয়েছি।’
জামায়াত রাজশাহীতে তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে চলতি বছরের শুরতেই। মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি সিদ্দিক হোসেন লড়বেন সিদ্ধান্ত হওয়ার পর থেকেই চলতে থাকে প্রস্তুতি। ‘রাজশাহী নাগরিক পরিষদ’ এর ব্যানারে সিদ্দিককে পরিচয় করিয়ে দিয়ে তার পক্ষে নগরজুড়ে ব্যানার-ফেস্টুনও সাঁটানো হয়।
অতীতের নির্বাচনে রাজশাহীতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোট পাওয়ার দাবিতে নগরে মেয়র পদে বিএনপির কাছে ছাড় প্রত্যাশা করছিল জামায়াত। তবে নিবন্ধন হারানোয় দলীয় ভোটের সুযোগ নেই দলটি। যে কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ের বিষয়টি ভাবনায় ছিল নেতাদের। কিন্তু বিএনপি তাদের জোটসঙ্গীর এই আবদারকে বরাবরের মতোই পাত্তা দেয়নি। বর্তমান মেয়র ও মহানগর বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকেই প্রার্থী ধরে কাজ করছে দলটি। এমনকি এখন পর্যন্ত জামায়াতের নেতাদের সঙ্গে কোন কথাও বলেনি রাজশাহী বিএনপি।
এদিকে, বুধবার ঢাকায় ২০ দলীয় জোটের সভায় দেশের তিন মহানগর রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেটে একক প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত ঢাকা থেকে কোনো নির্দেশনা আসেনি বলে জানিয়েছেন জামায়াতের স্থানীয় নেতারা। ফলে সিদ্দিক হোসেন লড়াই করবেন কি না তা নিয়ে এখনও দোটানায় তারা। তবে রাজশাহী জামায়াতের নেতারা এবার বিএনপিকে ছাড় দিতে চাননা। রাজপথে না পাড়লেও ভোটের লড়াইয়ে তাদের অবস্থান জানাতে চায় তারা।
জামায়াত নেতারা বলেছেন, রাজশাহী জামায়াতের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এবার বিএনপিকে ছাড় দিতে চাইছে না। এছাড়াও বিএনপির স্থানীয় নেতারা জামায়াতের সঙ্গে কোনো আলোচনাতেই যাচ্ছেন না। মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির আবু ইউসুফ সেলিমের কথাতেই তা স্পষ্ট।
সেলিম বলেন, ‘ঢাকায় ২০ দলীয় জোটের সভা হয়েছে বলেও শুনছি। কিন্তু আমাদের কাছে কোনো নির্দেশনা আসেনি। আর বিএনপির স্থানীয় নেতারা আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেননি। ফলে আমাদের প্রার্থীর প্রার্থিতা নিয়ে আমরা কিছুটা দোটানায় আছি।’
মহানগর বিএনপির সভাপতি ও বর্তমান মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল অবশ্য জামায়াতকে এতটুকু ছাড় দেয়ার পক্ষে নন। তার মতে, জামায়াতের এমন অবস্থা নেই যে তারা বিএনপিকে চাপ দিতে পারে।
বুলবুল বলেন, ‘শুধু জামায়াত কেন, ২০ দলীয় জোটের অন্য কোনো শরিক দলের কারও দেশের তিন সিটিতে নির্বাচন করার কথা নয়। আর রাজশাহীতে বিএনপির এমন অবস্থান হয়নি যে, অন্য কোনো দলের জন্য মেয়র পদ ছেড়ে দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘রাজশাহী এখনও বিএনপির ঘাঁটি। নির্বাচনে গেলে বিএনপি কখনও রাজশাহীর বিষয়ে কাউকে ছাড় দেবে না। রাজশাহীতে এককভাবে নির্বাচন করার সামর্থ্য ও জনপ্রিয়তা বিএনপির রয়েছে।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন