গাছের প্রতি পছন্দ ও ভালোবাসা থেকেই অনেকে টবে নানাবিধ ফুল এবং বাহারী গাছ লাগিয়ে থাকেন। অনেকে অনেক রকম চিন্তা-ভাবনা করে গাছ লাগান। আবার অনেকে শুধু সাজানোর জন্য বিভিন্ন গাছ লাগিয়ে থাকেন। কিন্তু, বুদ্ধি করে ঘর সাজানোর সাথে সাথে যদি এর থেকে কিছু বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়, তবে বিষয়টি মন্দ হয় না।
আপনারা যারা বাসার বারান্দায় বা ছাদে ঔষধি গাছ লাগান, একটু সচেতন হয়ে সেগুলো লাগালে বেশ উপকারে আসবে। আজকে আমরা জানব টবে ঔষধি গাছ অ্যালোভেরা সম্পর্কে।
আসুন জেনে নেই অ্যালোভেরা কিভাবে লাগালে ভালো থাকবে এবং আপনার কোন কোন উপকারে ব্যবহার করতে পারবেন।
অ্যালোভেরা গাছকে আমরা অনেকেই ঘৃতকুমারী নামে চিনি। ভেষজগুণ সম্পন্ন অ্যালোভেরা গাছ ঘর সাজাতেও অতুলনীয়।
টব/মাটি তৈরি করবেন: আমাদের দেশে প্রায় সব রকমের মাটিতে অ্যালোভেরা চাষ করা যায়। তবে এক্ষেত্রে বেলে দোআঁশ মাটি ব্যবহার করা সর্বোত্তম। বেলে দোআঁশ মাটিতে অ্যালোভেরা অথবা ঘৃতকুমারী ভাল ফলন পাওয়া যায়।
টব/পাত্রের আকৃতি বাছাই করুন: বাড়িতে অ্যালোভেরা চাষ করার জন্য আপনি ছোট অথবা মাঝারি সাইজের টব অথবা ড্রাম অথবা যে কোনো ধরনের পাত্র নির্বাচন করতে পারেন।
জাত বাছাই করুন: সারা বিশ্বে প্রায় ২৫০ প্রজাতির অ্যালোভেরা গাছ রয়েছে। তার মধ্যে মাত্র ২টি প্রজাতির গাছ বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়। এই অ্যালোভেরা অথবা ঘৃতকুমারী দেখতে অনেকটা কাঁটাওয়ালা ফণীমনসা বা ক্যাকটাসের মতো।
চাষ/রোপনের সঠিক সময়: বছরের যে কোনো সময়েই আপনি ইচ্ছা করলে এই অ্যালোভেরার চাষ করতে পারেন। তবে জুন মাস অথবা আষাঢ় মাসে গাছ লাগালে তা বাড়ে অনেক তাড়াতাড়ি।
অ্যালোভেরার মূলত শেকড়ের মাধ্যেমেই বংশবিস্তার করে থাকে। এর শেকড় থেকে বেরোনো ডাল সংগ্রহ করে অন্যত্র রোপন করলে গাছ হয়। চারা রোপন করার পর সঠিক নিয়মে পানি দিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে পানি যেন বেশি না হয়ে যায় এবং পানি যেন গাছের গোড়ায় জমে না থাকে।
যত্ন ও পরিচর্যা: অ্যালোভেরার চাষে সঠিক নিয়মে বাগানের যত্ন করতে হবে। গাছের গোড়ায় যেন আগাছা না জন্মে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আগাছা জন্মালে সেটা নিড়ানি দিয়ে উপড়ে ফেলতে হবে। গাছে নিয়মিত পানি দিতে হবে।
ব্যবহার ও উপকার:
জানালার পাশে বা বারান্দায় এই গাছের টব আপনার ঘরের শোভা বাড়াবে যেমন, সাথে প্রয়োজনে কাজ করবে ঔষধ হিসেবেও।
পুড়ে যাওয়া স্থানে অ্যালোভেরার আঠালো রস লাগালে যন্ত্রণা কমার পাশাপাশি ক্ষত দ্রুত শুকাবে।
আপনার হজমের সমস্যা নিরসন, পাকস্থলীর ইনফেকশান প্রতিরোধ, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা এমনকি ত্বকের নানাবিধ সমস্যায় এই অ্যালোভেরা ব্যবহার করে উপকার পাবেন।
অনিয়মিত এবং অস্বাভাবিক ঋতু সমস্যা দূর করতে অ্যালোভেরা বেশ উপকারি।
রক্তের শ্বেতকণিকা গঠনে সহায়তা করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরের ক্ষতিকারক বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করে অ্যালোভেরা।
রক্তে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও ওজন কমাতে অ্যালোভেরা পাতা দিয়ে তৈরি সরবত বেশ কার্যকরি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন