পবিত্র রমজান আমাদের আত্ম-পরিশুদ্ধির একটি মাস। এই মাসটি আপনার শারীরিক ফিটনেস যাত্রা শুরু করার এক নিখুঁত সময়।
আমরা সবাই জানি, রোজার অনেক স্বাস্থ্যগত অনেক উপকার রয়েছে। রোযা একটি প্রাকৃতিক ‘ডিটোক্সিফিকেশ’ যা বিপাক ক্রিয়ায় সহায়তা করে এবং শরীরের ওজন কমিয়ে দেয়। এটি কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যকে উন্নত করে, রক্তচাপ কমায় এবং অনেকের মধ্যে সেল রিসাইক্লিংয়ের ক্ষেত্রেও সাহায্য করে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, রোযা উত্তম স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় প্রতিশ্রুতিদায়ক। তবে, কিছু ভুল কৌশলও রয়েছে। যেমন-এসময় ক্রমাগত খাওয়া, বিশেষত ‘ইফতার’ এবং ‘সাহরির’ সময়ে। অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে।
পবিত্র রমজান মাসে কিভাবে স্লিম এবং ফিট থাকা যায়, সে ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য এবং পুষ্টিবিদ মেহের রাজপুত।
এ সময় যা করা উচিৎ
• সাহরির সময় কমপক্ষে ২ গ্লাস পানি পান করুন।
• বেশি করে ফল খান যা আপনার শরীরের পানি শূন্যতা দূর করবে। সবচেয়ে ভাল হয় তরমুজ এবং আঙ্গুরের মতো ফল হলে।
• ক্ষুধার্ততা এড়ানোর জন্য আপনার সাহরির খাবারে ফাইবার, প্রোটিন এবং কার্বোহাইট্রেড যুক্ত খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন।
• আপনার পরিবার এবং প্রিয়জনের সঙ্গে খাবার খাওয়া উচিৎ। এটি খাবারের প্রতি আপনার একাগ্রতা তৈরি করবে এবং আপনার খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে পুনরায় সংযোগ ঘটাবে।
• আপনার শারীরিক ব্যায়াম অব্যাহত রাখুন। তবে, আপনি চাইলে কঠোর অনুশীলন পরিহার করে হালকা ব্যায়াম করতে পারেন।
• খেজুর দিয়ে উপবাস ভাঙ্গার যে ঐতিহ্য তা অব্যাহত রাখুন। এতে রয়েছে উচ্চ ফাইবার ও পটাসিয়াম এবং এটি শরীরে পানি ধরে রাখতে সাহায্য করে।
যা করা উচিত না
• কাবাব বা চটকি মতো মসলাযুক্ত খাবার খেয়ে উপবাস ভাঙ্গা উচিৎ না - এটি আপনার হার্টের সমস্যার কারণ হতে পারে।
• স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি খাবেন না। রক্তের শর্করার মাত্রা কমিয়ে আনার জন্য অ্যালকোহল জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
• জাঙ্ক ফুডের উপর নির্ভর করবেন না। খাবারের ৯০/১০ নিয়ম বজায় রাখুন; যাতে থাকবে ৯০ শতাংশ উচ্চ পুষ্টিকর উপাদান এবং ১০ শতাংশ মিষ্টি ও ভাজা জাতীয় খাবার।
• আপনি যদি রমজানের সময় ওজন কমাতে চেষ্টা করেন তাহলে, কৃত্রিম ফ্লেবারযুক্ত পাউডার জাতীয় এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন।
• আপনার যদি মাথাব্যথা বা ক্যাফেইনের উপসর্গ থাকে, তবে ‘এক্সেড্রিন’ এর মতো ঔষধ এড়ানো যেতে পারে। এর পরিবর্তে, দিনের বেলায় বিশ্রামে থাকুন এবং মানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন।
• যদি আপনি ডায়াবেটিসের রোগী বা অনিয়মিত রক্তচাপের মাত্রায় ভূগেন, সেক্ষেত্রে উপবাস থেকে বিরত থাকুন। আপনার ঔষধের সময় পরিবর্তন হলে তা আপনার অবস্থাকে আরো কঠিন করে তুলতে পারে।
• আপনি যদি কিডনি রোগে ভুগে থাকেন এবং দীর্ঘ সময়পানি শূন্যতায় ভূগেন, তাহলে উপবাস থেকে বিরত থাকুন।
• আগে থেকে শারীরিক ব্যায়ামের অভ্যাস না থাকলে রোযা রাখা অবস্থায় তা করদে যাবেন না।
এই রমজানে সুস্থ্য থাকুন, ভাল থাকুন-এই প্রত্যাশায়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন