ধূমপানের ক্ষতি জেনে যারা এই বদভ্যাস ছাড়তে চান, হাল আমলে তাদের মধ্যে জনপ্রিয় হচ্ছে ইলেকট্রিক বা ই-সিগারেট। সিগারেটের মতোই দেখতে, চলে ব্যাটারিতে।
এখানে তামাক নেই, কিন্তু সিগারেটের মতোই টানা যায়। এ যেন দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো। আকাঙ্ক্ষা, তামাকের আসক্তি থেকে ধীরে ধীরে বের হয়ে আসা।
কিন্তু এতে এই ই-সিগারেট কি নিরাপদ? কিছু উদাহরণ বলছে মোটেও না।
এই যেমন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ার স্যামুয়েলের (ছদ্মনাম) কাহিনি। একটি রেস্তোরাঁয় অল্প সময়ের একটি চাকরি করেন ১৮ বছরের এই তরুণ। ভেবেছেন ধূমপান করবেন। সরাসরি সিগারেটে হাতেখড়ি করতে চাননি বলে তিন মাস টেনেছেন ই-সিগারেট।
তার প্রভাব নিয়ে ফলাও করে প্রতিবেদন করে স্থানীয় মেডিকেল সাময়িকী। তিন মাসের ই-সিগারেট তার ফুসফুসকে এতটাই খারাপ করে দেয়ায় তাকে পিটসবার্গ মেডিকেল সেন্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি বিভাগে ভর্তি হতে হয়।
ডাক্তারদের মতে, ই-সিগারেটের কারণে স্যামুয়েলের বুকে কফ জমে এবং শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পরে তার বুকে ব্যথা ও ফুসফুসে পানি জমার লক্ষণ দেখা দেয়।
পিটসবার্গ হাসপাতালের ডাক্তাররা জানান, ইলেকট্রিক সিগারেট বা ভেপ এর মধ্যে যে উপাদান থাকে সেগুলো সাধারণত তরল পদার্থে থাকে। তরলটিকে ই-জুস বলা হয়। যদিও জুস বলতে আমরা যা বুঝি তার কোনটিই এটিতে নেই।
ভেপের মূল উপাদান হল এই জুস। এই জুসের মধ্যে সাধারণত ফ্লেবার, প্রপিলিন গ্লাইকোল বা তরল অ্যালকোহল, গ্লিসারিন ও দাম-পরিমাণ ভেদে থাকে নিকোটিন (তামাকের যে উপাদানটি আকৃষ্ট করে ধূমপায়ীদের)। অনেক ক্ষেত্রে নিকোটিন ছাড়া বা সামান্য পরিমাণ নিকোটিনে ই-সিগারেট পাওয়া যায়। তবে বাকি উপাদানগুলো সরাসরি ফুসফুস পর্যন্ত টানা নিকোটিনের চেয়ে কোন অংশে কম নয়।
অ্যালার্জির সমস্যা থাকলেও ই সিগারেট থেকে দূরে থাকা বাঞ্ছনীয়। ই-জুসে যে উপাদানগুলো থাকে সেগুলো দীর্ঘদিন ব্যবহারে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে। যদিও ই সিগারেট ও ভেপ ব্যবহার করা হয় সাধারণ সিগারেটের অভ্যাস ছাড়ার জন্য।
সাময়িকীটি আরও যে সতর্কতা দিয়েছে সেটি হলো, সিগারেটের নেশার মতোই ই-সিগারেটেও জমতে পারে আশক্তি। এটিও এক ধরনের নেশায় পরিণত হয়ে যায় যা থেকেও বের হওয়া বেশ কঠিন। এছাড়া ভেপ মেশিন বিস্ফোরণের ঘটনাও এখন আর নতুন কিছু নয়।
তাই সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: সিগারেট ও ইসিগারেট দুটোই শরীরের জন্যে সমান ক্ষতিকর।
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন