কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ছাত্র হলের মাত্র কয়েক গজ দূরেই নির্মিত হচ্ছে ছাত্রীদের জন্য একটি আবাসিক হল। এতে সুপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে পরিকল্পিত অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা। এদিকে দুইটি ছাত্র হলের কাছাকাছি নতুন ছাত্রী হল নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ও কাজী নজরুল ইসলাম হলের কয়েক গজ দূরেই শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের মূল ফটক সংলগ্ন সড়কের উপর ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ছাত্রীদের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট নতুন একটি আবাসিক হল।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের সড়ক কেটে ছাত্রী হল নির্মাণ কাজের প্রক্রিয়া চলছে। নতুন এই ছাত্রী হলটি ছাত্র ও ছাত্রীদের প্রাইভেসিকে (গোপনীয়তা) চরমভাবে বিনষ্ট করবে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। ছাত্রদের হলের এত কাছে ছাত্রী হল নির্মাণ হলে ছাত্র বা ছাত্রীদের হলের ছাদে কেউই স্বাচ্ছন্দে উঠতে পারবে না। দত্ত হল, শিক্ষক ডরমেটরি, উপাচার্যের বাসভবন, নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলের মাঝে এ জায়গাটি নতুন কোন স্থাপনা নির্মাণের জন্য উপযোগী নয়। এ সংকুচিত জায়গায় নতুন হল নির্মাণ না করে ভূমি অধিগ্রহণের দিকে দৃষ্টি দিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। দত্ত এবং নজরুল ইসলাম হলের কাছেই নতুন হল নির্মাণ করলে এসব স্থাপনাকে ঘিরে কোন ফাঁকা জায়গাই আর অবশিষ্ট থাকবে না। সুদুর পরিকল্পনা থাকলে কর্তৃপক্ষ এমনটি কিভাবে চিন্তা করতে পারে বলে ক্ষোভ জানান দত্ত ও নজরুল হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
এদিকে নতুন হল নির্মাণের জন্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের সড়ক কাটা পড়ায় দত্ত হলের জন্য সড়কটি ঘুরিয়ে টিলার উপর দিয়ে খাড়া করে নামিয়ে দেওয়ার কাজ চলছে, যা নির্মিতব্য ছাত্রী হলের প্রাচীর ঘেষে করা হবে।
বেশ কয়েকটি দালানের মাঝে খুবই স্বল্প জায়গায় ছাত্রী হল নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করায় শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে বেশ ক্ষোভ এবং মিশ্র প্রতিক্রিয়াও লক্ষ্য করা যচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকেও এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
ছাত্র হলগুলোর পাশেই ছাত্রী হল নির্মাণ প্রসঙ্গে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. আবু তাহের বলেন, ‘ছাত্র হলের পাশেই ছাত্রী হল নির্মাণ হলে অচিরেই ছাত্র-ছাত্রীদের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা না করেই যত্রতত্র ভবন নির্মাণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য ও অবকাঠামো নষ্ট করছে। ভূমি অধিগ্রহণের প্রতি কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া উচিত।’
ছাত্র হলের সাথে কিভাবে ছাত্রী হল নির্মাণ হয় এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আশরাফ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে জায়গা নেই তাই এখানে হল নির্মাণ করা হচ্ছে।’
তিনি আরও অবাক করে দিয়ে বলেন, ‘শিক্ষক ডরমেটরির পাশে নিচু যে জায়গাটি আছে সেখানে ছাত্রীদের জন্য আরও একটি হল নির্মাণ করা হবে।’
দ্য রিপোর্ট
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন