রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে গত বৃহস্পতিবার পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেটের আঘাতে সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমানের দুই চোখ নষ্ট হয়ে গেছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হয়ে এখন সিদ্দিকুরের ঠাঁই মিলেছে শেরেবাংলা চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে।এছাড়াও এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ১৫ জন। আহতদের কাউকে পাওয়া যায়নি হাসপাতালে। ১৩ জনকে আটক করে শাহবাগ থানায় নেয়া হয়। এ কারণে পুলিশের পক্ষ থেকে ১২’শ শিক্ষার্থীর নামে করা হয় মামলা।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, জনগণের নিরাপত্তার জন্যই প্রশাসন। এ কেমন নিরাপত্তা? এভাবে অন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আর কত সিদ্দিকুরের চোখ যাবে এমন ন্যায্য দাবিতে?
কি হয়েছিলো সেদিন-
পরীক্ষার তারিখ ঘোষণাসহ ৭টি দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে শান্তিপূর্ণ মানব বন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সকালে শাহবাগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সাথে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আটক করা হয় বেশ কয়েকজনকে। আর মামলা হয় ১২’শ শিক্ষার্থীর নামে।
কি ছিলো শিক্ষার্থীদের দাবী-
১. অধিভুক্ত হওয়া কলেজসমূহের ব্যাপারে নীতিমালা প্রণয়ন এবং প্রকাশ (একাডেমিক সিলেবাস, পরীক্ষা পদ্ধতি, প্রশ্নের ধরণ, প্রশ্নের মানবন্টন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কলেজসমূহের সম্পর্ক ইত্যাদি)।
২. সম্মান ২য় ও ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভাইভা/ব্যবহারিক পরীক্ষা অতি অল্প সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা।
৩. সম্মান তৃতীয় বর্ষের এবং মাস্টার্স শেষ পর্বের পরীক্ষা দ্রæত সময়ের মধ্যে গ্রহণ।
৪. ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্স শেষ পর্বের ভর্তি কার্যক্রম দ্রæত সম্পন্ন করা।
৫ ডিগ্রির আটকে থাকা সব বর্ষের পরীক্ষা দ্রুত সম্পন্ন করা।
৬. অধিভুক্ত কলেজসমূহের সব তথ্য সংবলিত একটি ওয়েবসাইট তৈরি।
৭. শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং সেশনজট নিরসনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ।
উল্লেখ্য, ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের দ্বিতীয় বর্ষের এবং ২০১১-২০১২ শিক্ষাবর্ষের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের লিখিত পরীক্ষা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৬-৭ মাস আগে অনুষ্ঠিত হলেও সাতটি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ায় এসব কলেজের সব বিভাগের শিক্ষার্থীদের ভাইভা/ব্যবহারিক পরীক্ষা এখনো পর্যন্ত সম্পন্ন হয়নি। যেখানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা অন্যান্য কলেজের এই বর্ষের ফলাফল পর্যন্ত ইতোমধ্যে প্রকাশ হয়েছে। এছাড়া ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের এবং ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্স শেষ পর্বের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফরম পূরণ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৬-৭ মাস আগে সম্পন্ন হলেও এখন পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এসব পরীক্ষা গ্রহণের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। অথচ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এসব পরীক্ষা কয়েক মাস আগেই শেষ হয়েছে।
একারণে হয়েছে আন্দোলন, ঝরেছে রক্ত আর হারিয়েছে চোখ অবশেষে সাতটি সরকারি কলেজ পেল বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষার তারিখ।আস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন