রাজধানীর চাঁনখারপুলে একটি মিষ্টির দোকানে ছাত্রলীগের এক নেতাকে ধূমপান করতে না দেয়ায় দোকানিকে সিগারেটের আগুন দিয়ে ছ্যাঁকা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্তরা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম জিসান এবং ঢাবির ফজলুল হক মুসলিম (এফএইচ) হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম রাকিব।
সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে মো. আরিফুল ইসলাম জিসান ও রাকিব হল ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে নিয়ে চাঁনখারপুলের একটি মিষ্টির দোকানে খেতে যান। এ সময় তারা দোকানের মধ্যে ধূমপান করছিলেন। দোকানটি ছিল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। ফলে দোকানের ম্যানেজার গিয়াস উদ্দিন তাদেরকে বাইরে গিয়ে ধূমপানের অনুরোধ করেন। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হন জিসান এবং রাকিব। এক পর্যায়ে হল সভাপতিকে বিষয়টি জানিয়ে ছাত্রলীগের ১০-১২ জন কর্মীকে ঘটনাস্থলে হাজির করেন তারা। এরপর নেতাকর্মীদের নিয়ে দোকান থেকে ম্যানেজারকে তুলে আনতে চান তারা। এ সময় বাধা দিলে দোকান মালিক আল আমিনের প্রতিও ক্ষেপে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। দু’জনকেই মোটরসাইকেলে করে তুলে আনা হয় হলে। এরপর ম্যানেজার গিয়াস উদ্দিনের উপর চালানো হয় নির্যাতন। এক পর্যায়ে বিকেলে গিয়াস উদ্দিনকে আটকে রেখে আল আমিনকে এক লাখ টাকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিতে বলা হয়। কিন্তু দোকান মালিক তাৎক্ষণিকভাবে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে হাজির হলে তা নিতে অস্বীকৃতি জানায় নেতারা। সন্ধ্যায় বিষয়টি জানাজানি হলে সাড়ে ৭টার দিকে গিয়াস উদ্দিনকে ছেড়ে দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে মৎস্য ভবনের সামনে থেকে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
তবে ঘটনার বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার সিদ্দিক সিসিম। তিনি বলেন, আমি এমন ঘটনার কথা শুনিনি এখনো। আমি হলের বাইরে ছিলাম। যদি আমাদের সংগঠনের কেউ এমন করে থাকে, তাহলে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। আর সাধারণ কোনো ছাত্র করে থাকলে হল প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলবো।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসানের সঙ্গে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স জাগো নিউজকে বলেন, এ ঘটনার বিষয়ে কিছু জানি না।যদি এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবো। ছাত্রলীগে অপরাধীদের জায়গা নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এম আমজাদ আলী বলেন, ঘটনাটি জানতে পেরে আমি তাৎক্ষণিকভাবে হল প্রশাসনকে অবহিত করেছি। তারা ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই ওই লোকটিকে ছেড়ে দেয়া হয়। হল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি তদন্ত করতে বলা হয়েছে। তারা প্রতিবেদন দিলে সেই অনুযায়ী জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন