ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েও অর্থের অভাবে ভর্তি হতে পারছে না লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার মেধাবী ছাত্রী তানিয়া তাহিদ।
সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘খ’ ইউনিটে ৮০৮তম ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একই ইউনিটে ১৩১৮তম স্থান পেয়ে এলাকার মানুষকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। তানিয়া উপজেলার পূর্ব সির্ন্দুনা গ্রামের তাহিদুল ইসলাম ও নুরুন্নাহার বেগমের মেয়ে। তিন বোনের মধ্যে তানিয়া দ্বিতীয়।
এর আগেও তানিয়া ৫ম ও ৮ম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। সে হাতীবান্ধা সিন্দুর্না লোকমান হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৫ সালে এসএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছে। ২০১৭ সালে রংপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় মানবিক শাখা থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছে।
তানিয়ার বাবা তাহিদুল ইসলাম তিস্তা নদীতে কয়েকবার বসতবাড়ি হারিয়ে বর্তমানে সিন্দুর্ণা বাজারে রেডিও মেকানিক হিসেবে কাজ করছেন। এ অবস্থাতেও তিনি মেয়ের পড়াশুনা চালিয়ে গেছেন। বর্তমানে মেয়ের এমন সাফল্য জেনেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো মতো অবস্থা নেই তার।
তানিয়া জানায়, সবার সহযোগিতায় আমি এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ ৫ অর্জন করি। এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খ ইউনিটে ৮০৮তম স্থান পেয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাই। কিন্তু আমার বাবার পড়াশুনা করার মতো সামর্থ্য নেই। কেউ আমাকে সহযোগিতা করলে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করার সুযোগ পেতাম। আমি বিসিএস পড়ে প্রশাসনে জব করতে চাই।
তাহিদুল ইসলাম বলেন, তিস্তা নদীতে কয়েকবার বাড়িঘর হারিয়ে আজ আমি নি:স্ব। অনেক কষ্টে আমার সংসার চলে। মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে, কিন্তু পড়াশুনা করার মতো অর্থ আমার নেই। আমার মেয়ের অনেক ইচ্ছে সে বিসিএস পড়বে। তাই সমাজের বিত্তবানরা একটু সহযোগিতা করলে আমার মেয়ের স্বপ্ন পূরণ হতো।
হাতীবান্ধা সিন্দুর্না লোকমান হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিছুর রহমান বাবুল জাগো নিউজকে বলেন, মেয়েটি দারিদ্র হলেও মেধাবী। তার বাবা একজন সামান্য রেডিও মেকানিক। তার বাবার পক্ষে পড়াশুনা খরচ বহন করা কষ্টকর। তাই সবার সহযোগিতা পেলে সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পড়াশুনা করতে পারবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন