ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার’দা সূর্য সেন হলে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের থাকা কক্ষগুলো দখলের পরিকল্পনা করছে হল শাখা ছাত্রলীগ। এ লক্ষ্য গত কয়েকদিন ধরে সকল কক্ষের ডাটা সংগ্রহ করছেন বলে অভিযোগ করেছে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
হল সুত্রে জানা যায়, হলে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুইটি গ্রুপ রয়েছে। দুই গ্রুপের রয়েছে হলে আলাদা আলাদা কক্ষ। এর বাইরে রয়েছে হল প্রশাসন থেকে বরাদ্দ দেয়া কক্ষ যা নন-পলিটিক্যাল নামে পরিচিত। যার সবকটিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বৈধভাবে থাকত।
হল ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, নন-পলিটিক্যাল কক্ষসমূহের নিয়ন্ত্রণ নিতে সম্প্রতি হলের প্রতিটি রুমে গিয়ে একটি ফরম দেয়া হচ্ছে। যেখানে প্রত্যেকের নাম, বিভাগ মোবাইল নম্বর লিখানো হচ্ছে। শিগ্গিরই এর মাধ্যমে এসব কক্ষসমূহ পলিটিক্যাললি নিয়ন্ত্রন নিবে ছাত্রলীগ। দুই গ্রুপই এ লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল পরিবর্তনকে বলেন, হল থেকে আমাকে দুই একজন আমাকে জানিয়েছে। আমি সাথে সাথে হল ছাত্রলীগকে ডেকেছি। তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেছে, স্যার আমরা খোজ খবর নিচ্ছি কোন রুমে কারা থাকে। পরশুদিন এই ব্যাপারে আমি অলরেডি মিটিং ডেকেছি। যাদেরকে বরাদ্দ দিয়েছি তাদের যেনো কেউ সমস্যা না করতে পারে।
সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সভাপতি সরওয়ার বিশ্ববিদ্যাল শাখা সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক শাহিন বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্সের অনুসারী। এদিকে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, সূর্যসেন হলে এমন কক্ষ রয়েছে যেখানে অনেক পলিটিকালরা সিঙ্গেল রুমে একা থাকে। বড় রুমগুলোতে মাত্র ২ জন থাকে। আর আমরা ‘গাদাগাদি’ করে একজনের জায়গায় ৪ জন, ২ জনের জায়গায় ৬ জন থাকি। তারপরেও আমাদের কক্ষসমূহ নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। একটি রুমে ৩ জনকে পলিটিক্যালি উঠিয়েছেন বলে জানা যায়।
এছাড়া হল সুত্রে জানা যায় , ২য় তলা ও ৩য় তলার পলিটিক্যাল কক্ষগুলোতে অনেক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রয়েছেন যাদের ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে অনেক আগে। এর আগে গত বছরের নভেম্বর মাসে বর্তমান হল শাখার সভাপতি গোলাম সরোয়ার চার তলার ব্লকে দশটি রুম থেকে বৈধ শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের তুলে দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি হল প্রশাসন থেকে বরাদ্দ নিয়ে থাকি। অথচ রাতের ১টার সময় এসে আমার তথ্য আমার রুমের তথ্য দিতে বলে। পলিটিক্যালি আরেক জন ছেলে দেয়ার কথা বলে যায়। আমরা হল প্রশাসনকে দিয়েছি। আবার কেন তথ্য দিব। অভিযোগের বিষয়ে হল ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক দুইজনই অস্বিকার করেন। এমন কেউ করেছেন কিনা তারা জানেনা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবিদ আল হাসান পরিবর্তনকে বলেন, আমি অভিযোগ এখনো শুনিনি। তবে এমন কেউ করলে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন