ভুয়া নিয়োগ পরীক্ষা ও নিয়োগপত্র দিয়ে এক শিক্ষিকার কাছ থেকে আট লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় পশ্চিম বামনগ্রাম দাখিল মাদ্রাসার সুপার রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ছয়মাস বিনা বেতনে চাকরির পর অন্য আরেকজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ভিটেমাটি বিক্রি করে দেওয়া আট লাখ টাকা ও চাকুরি ফেরতের জন্য মামলা করায় মাদ্রাসা সুপার নানাভাবে ওই শিক্ষিকাকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শিক্ষিকা আঞ্জুয়ারা পারভীন জানান, বামনগ্রাম দাখিল মাদ্রাসার জুনিয়র মৌলভী পদে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে তার স্বামী কামরুজ্জামানকে মাদ্রাসার সুপার রেজাউল করিম প্রস্তাব দেয়। এ জন্য আট লাখ টাকা দাবি করে।
তিনি বলেন, চাকরির আশায় ভিটেমাটি বিক্রি করে সুপার রেজাউল করিম ও সহকারী সুপার মোয়াজ্জেম আলীকে আট লাখ টাকা দেওয়া হয়। এরপর ২০১৫ সালের ১৪ নভেম্বর মাদ্রাসার প্যাডে তাকে নিয়োগপত্র প্রদান করেন। ওই বছরের ১৬ নভেম্বর মাদ্রাসায় জুনিয়র মৌলভী পদে যোগদান করে ছয়মাস নিয়মিত হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চাকরি করি।
ওই শিক্ষিকা বলেন, এই সময়ের মধ্যে বেতনের চাপ দিলে আজকাল করে কালক্ষেপণ করেন মাদ্রাসা সুপার। ছয়মাস পর সুপার রেজাউল করিম জানায় নিয়োগে ঝামেলা আছে পুনরায় নিয়োগ পরীক্ষা দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘পুনরায় গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর সাজানো নিয়োগ পরীক্ষার নাটক সাজিয়ে মাদ্রাসা সুপার আমাকে বাদ দিয়ে অন্য একজনকে ১১ লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে নিয়োগ দেন। আমাকে বিনাবেতনে এবং আট লাখ টাকা ফেরত না দিয়ে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়।’
আঞ্জুয়ারা পারভীন বলেন, ‘বিষয়টি বার বার বলা সত্ত্বেও মাদ্রাসা সুপার কর্ণপাত করেননি। এ অবস্থায় আট লাখ টাকা ও চাকরি ফেরত না দেওয়ায় আমার স্বামী কামরুজ্জামান বাদী হয়ে কোর্টে মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর থেকেই আমাকে এবং আমার পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।’
শিক্ষিকার দেবর বকুল আহমেদ জানান, টাকা দিয়ে চাকরি নেওয়ার ছয় মাস পর তাকে বের করে দেয়া হয়। বর্তমানে ভাবির চাকরির বয়সও শেষ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় চাকরি ফেরত না পেলে পরিবারটিকে পথে বসতে হবে।
হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করে মাদ্রাসার সুপার রেজাউল করিম বলেন, ‘সাত লাখ টাকার নেওয়ার পর সাময়িক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়ার সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য অন্য একজনকে সুপারিশ করেন এবং সাত লাখ টাকা দেওয়ায় তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আর আগের শিক্ষিকার টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে মামলা হয়েছে। আদালত যে নির্দেশনা দিবেন সে মোতাবেক আমরা কাজ করব।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন