জেলার পলাশ উপজেলার আদর্শ শিশুশিক্ষা নিকেতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৫ম শ্রেণির সমাপনীর মডেল টেষ্ট পরীক্ষায় এবার অংশগ্রহণ করেছে জান্নাত মেঘলা।
পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, দু’পায়ে পরীক্ষার খাতা ভাঁজ করা থেকে শুরু করে খাতা মার্জিন করা, পাতা উল্টানো, লেখা, কলমের মুখ খোলা সকল কাজই করছে পা দিয়ে।
এক পলক তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে তার পর ডান পায়ে কলম ধরে সাবলীলভাবে লিখে যাওয়া দেখে। পরীক্ষ শেষে মেঘলার সাথে কথা বলে জানত চাইলে মেঘলা জানায়, পরীক্ষা ভালো হয়েছে তারজন্য পলাফলও ভালো হবে আশা করি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘোড়াশাল ইউরিয়া সার কারখানা স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী জান্নাত মেঘলা। ঘোড়াশাল ইউরিয়া সার কারখানার হিসাব বিভাগের কর্মকর্তা রুহুল আমিনের তিন মেয়ের মধ্যে মেঘলা সবার ছোট।
মেঘলার মা কেয়া আক্তার জানান, জন্ম থেকেই মেঘলার দুটি হাত নেই, তাই পা দিয়ে সে সকল ধরণের কাজ স্বাভাবিকভাবেই করতে পারে। ছোটবেলা থেকেই বই-খাতার প্রতি তার প্রবল আগ্রহ। তার বড় দুই বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সে লেখাপড়া করছে। তারাই মেঘলাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাচ্ছে।
ঘোড়াশাল ইউরিয়া সার কারখানা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী অধ্যক্ষ সেলিনা আক্তার জানান, মেঘলা শিশু শ্রেণি থেকে তার স্কুলে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে। সে অত্যন্ত মেধাবী, বরাবরই সে প্রতিটি শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে আসছে। এ ছাড়া স্কুলে সাংস্কৃতিক ও রচনা প্রতিযোগিতায়ও প্রথম স্থান অধিকার কওে আসছে। মেঘলা প্রতিষ্ঠানের মুখ উজ্জ্বল করবে বলে আমরা আশাবাদী।
মেঘলার বিষয়ে পলাশ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন ভূঁইয়া জানান, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকার কর্তৃক পরীক্ষা কেন্দ্রে অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় নির্ধারিত থাকলেও মেঘলার সেই সময়ের প্রয়োজন হয় না। সে নির্ধারিত সময়ের ২০ মিনিট আগেই প্রতিটি পরীক্ষা শেষ করতে পারছে। তার মেধা ও সক্ষমতার কারণে একদিন সে তার লক্ষ্যে পৌঁছাবে।
জান্নাত মেঘলা জানায়, শারীরিক অক্ষমতার কারণে তার কোনো সমস্যা হচ্ছেনা। পরীক্ষা ভালো হচ্ছে, অন্য বিষয়ের পরীক্ষাও ভালো হবে বলে আশাবাদী। ভবিষ্যতে জান্নাত মেঘলা ম্যাজিস্ট্রেট হতে চায়।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন