এবার বাদ পড়া বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষকরা তাদের চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে অবস্থান ও প্রতীকী অনশন পালন করছে। বিনা বেতনে অর্ধহারে, অনাহারে মানবেতর জীবন যাপন আর কত দিন চলতে হবে, সে প্রশ্ন রেখেছেন তারা।
বাদ পড়া স্কুলগুলো জাতীয়করণ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথাও বলেছেন শিক্ষকরা।
রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষকরা। বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি ব্যানারে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
এই শিক্ষক জোটের এই কর্মসূচি নিয়ে গত গত এক মাসে পাঁচটি শিক্ষক আন্দোলন হলো ঢাকায়।
সরকারের শেষ বছরে প্রায় প্রতিবার নানা দাবিতে সোচ্চার হন শিক্ষকরা। এবারও ডিসেম্বরে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে তাদেরবেতন গ্রেড উন্নীত করার দাবি জানিয়েছেন।
এই আন্দোলন শেষ হতে না হতেই জাতীয় প্রেসক্লাবেন সামনে প্রথমে অবস্থান ও পরে আমরণ কর্মসূচি পালন করে নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।
প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে ছয় দিন পর কর্মসূচি স্থগিত করে এই শিক্ষকরা বাড়ি ফেরার পর আবার জাতীয়করণের দাবিতে অনশন শুরু করে এবতেদায়ি মাদ্রসার শিক্ষকরা। কয়েকদিন অনশনের পর সরকারি আশ্বাস পেয়ে তারাও বাড়ি ফিরেছে।
এদের কর্মসূচি শেষ হতে না হতেই ১০ জানুয়ারি থেকে আবার অনশন শুরু করেন এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। তাদের দাবি, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করতে হবে।
শিক্ষক আন্দোলনের এই স্রোতে সব শেষ যুক্ত হলেন সরকারিকরণ থেকে বাদ পড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি সরার ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক লাখ চার হাজার শিক্ষকের চাকরি জাতীয়করণ করা হয়েছে। তবে বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির হিসাব অনুযায়ী আরও চার হাজার ১৫৯টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের বাকি রয়ে গেছে।
বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মামুনুর রশিদ খোকন বলেন, ‘শিক্ষকদের পিছিয়ে রেখে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়।’
মামুনুর রশিদ বলেন, ‘আমরা চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে প্রেসক্লাবে অবস্থান নিয়েছি। যতক্ষণ পর্যন্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। প্রয়োজনে আমরণ অনশনের মতো কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’
একই এলাকায় আরও একটি অনশন কর্মসূচি চলছে অন্য একটি শিক্ষক জোটের। গত ১০ জানুয়ারি থেকে জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনে নামেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
১৫ জানুয়ারি থেকে এই শিক্ষকরা প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তার পাশে পাটি বিছিয়ে গায়ে কম্বল জড়িয়ে শুয়ে বসে আমরণ অনশন পালন করে যাচ্ছেন তাদের চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে।
আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বলেন, শিক্ষাব্যবস্থায় বৈষম্য দূরীকরণে এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষকরা জাতীয়করণ করতে হবে। সারা দেশের প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী এ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ৮৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে এক জনকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অনেক শিক্ষকের শরীরে স্যালাইন লাগিয়েই তারা অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন