ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্যকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় বাম ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের বেধড়ক মারধর করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় আহত হয়েছে ছাত্র ইউনিয়নসহ বাম সংগঠনগুলোর অন্তত ১০ নেতাকর্মী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বিকেল ৫টার দিকে তারা ঢামেকের জরুরি বিভাগে টিকিট সংগ্রহ করে ভর্তি হন।
তারা হলেন- লিটন নন্দী, রাজিব কুমার দাস, তাজুল ইসলাম, তাজুয়ার, জহরলাল রায়, অপু, আরশাদ, উম্মে হাবিবা বেনজির, রায়হান, রাসেল ও নাদিম।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের এসআই মো: বাচ্চু মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আহত হয়ে ১০ জন শিক্ষার্থী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্যকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় বাম ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের বেধড়ক মারধরের শিকার হন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা লাঠি ও লোহার রড নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের ভেতরে এবং বাইরে কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ জন আহত হন। মঙ্গলবার বিকেলে এ ঘটনার ছবি তোলার সময় বেশ কয়েকটি ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়। এসময় ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হন কয়েকজন সাংবাদিক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল ৪টার দিকে একাডেমিক বৈঠকে যাওয়ার সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানকে ঘিরে ধরেন আন্দোলনকারী বাম নেতাকর্মীরা। সেখানে তারা উপাচার্যের কাছে চার দফা দাবি পূরণের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।
আন্দোলনরত ছাত্রীদের ওপর নিপীড়নের ঘটনায় তদন্ত কমিটির রিপোর্ট দ্রুত দেয়ার আশ্বাস দিলেও আন্দোলনকারীরা সেটা না মেনে তাৎক্ষণিকভাবে প্রক্টরকে বহিষ্কারসহ চার দফা দাবি মেনে নেয়ার জন্য উপাচার্যকে চাপ দেন।
এসময় রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে উপাচার্যকে কার্যত চার দিক থেকে ঘিরে ধরে অবরুদ্ধ করে রাখেন বাম ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। এরই একপর্যায়ে পেছন থেকে তানভীর আহম্মেদ মুইন নামে ছাত্র ইউনিয়নের এক কর্মী উপাচার্যকে ধাক্কা দেন।
খবর পেয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে উপাচার্যকে উদ্ধার করেন। পরে বাম ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। রেজিস্ট্রার ভবন এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।
উল্লেখ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষার্থীদের ব্যানারে’ চার দফা দাবি আদায় না হওয়ায় সকাল থেকে উপাচার্যের অফিস ঘেরাও করে তিন গেটে ভাঙচুর চালায় আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো হলো- অধিভুক্ত কলেজ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রীদের নিপীড়নকারী ছাত্রলীগ নেতাদের বহিষ্কার, প্রক্টরের পদত্যাগ, শিক্ষার্থীদের নামে দেয়া মামলা প্রত্যাহার এবং তদন্ত কমিটিতে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি রাখা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন