ক্যাম্পাসে দম্পতিদের জন্য সেলফি বুথের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও বামসংগঠনের নেতাদের ব্যাপক ক্ষোভ ও সমালোচনার মুখে পড়েছে ইয়ামাহা কোম্পানি নামের মোটরসাইকেল বাজারজাতকরণ প্রতিষ্ঠান।
কোম্পানিটি আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বরে একটি অস্থায়ী কুটির তৈরি করে দম্পতিদের জন্য এই ব্যবস্থা করে।
অভিযোগ উঠেছে, কোম্পানিটি এই আয়োজনের নামে ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করার পাশাপাশি প্রচার চালাচ্ছে তাদের নিজস্ব পণ্যের। সকালে ঢাকাটাইমস প্রতিবেদকের কাছে এসব অভিযোগ করেন প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতারা ও ঢাবির শিক্ষার্থীরা।
তারা বলছেন, একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চত্বরে কেবল দম্পতিদের নিয়ে আয়োজন এটা কেমন রুচির প্রকাশ! আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ধরনের আয়োজনের অনুমতি দেয় কীভাবে!
যদিও কোম্পানির কর্মকতাদের দাবি, তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে এই আয়োজন করেছেন। কিন্তু এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে ঢাকাটাইমসকে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে প্রিয় মুহূর্ত ফ্রেমবন্দি করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বরে সেলফি বুথের আয়োজন করে ইয়ামাহা কোম্পানি। সেখানে সেলফি তুলে প্রতি ঘণ্টায় তিনটি লাকি কাপলকে ইয়ামাহা কাপল টি-শার্ট দেয়ার ঘোষণা দেয় কোম্পানিটি। পরবর্তী সময়ে এই লাকি কাপলদের মধ্যে গ্র্যান্ড ফেসবুক কন্টেস্টের মাধ্যমে তিনটি লাকি কাপল পাবে কাপল রিস্ট ওয়াচ।
ইয়ামাহার এই আয়োজনের সমালোচনা করে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের সমন্বয়ক ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি ইমরান হাবিব রুমন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাসে কাপলদের (দম্পতি) জন্য ইয়ামাহা কোম্পানিকে দিয়ে ব্যবসা করাচ্ছে। তারা এর মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করছে।’ এসব মোকাবিলার জন্য ডাকসু নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন তিনি।
১৪ ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে প্রগতিশীল ছাত্র জোট ইয়ামাহা কোম্পানির এই আয়োজনের তীব্র সমালোচনা করে। ১৯৮২ সালের এই দিনে স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে ১০ জন নিহত হন। এরপর থেকে দিনটি স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে ছাত্রসংগঠনটি।
ক্যাম্পাসে ইয়ামাহার কাপল সেলফি বুথের আয়োজনে পরিবেশ নষ্টের অভিযোগ করে এর সমালোচনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও। রিফাত নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ক্যাম্পাসে নানান সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে বাইরের কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান পরিবেশ নষ্ট করছে।’
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ইয়ামাহা কোম্পানির সুপারভাইজার রাহুল আহমেদ বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে এই আয়োজন করেছি।’
ইয়ামাহা কোম্পানির কাপল সেলফি বুথের অনুমতি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী ঢাকাটাইমসকে বলেন, তারা কাউকে এ ধরনের কোনো অনুমতি দেননি। বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে জানান।
(ঢাকাটাইমস/
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন