রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী শিকলবন্দি জীবন কাটাচ্ছেন। তবে এটা স্বইচ্ছায় নয়। তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। সমাজকর্ম বিভাগের মেধাবী ওই ছাত্রীর মাথায় জটিল রোগ বাসা বেঁধেছে। তিনি এখন পাগলপ্রায়। একারণে ছায়া দেবী নামে ওই ছাত্রীকে শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, ওই ছাত্রীর উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন প্রায় তিন লাখ টাকা। ওই টাকা জোগাড় করা সাঁওতাল সম্প্রদায়ের দিনমজুর বাবার পক্ষে সম্ভব নয়। চিকিৎসা না করানোয় ওই ছাত্রীকে শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছে। হতভাগা বাবা লাল টুডু মেয়েকে বাঁচানোর জন্য সমাজের বিত্তবানদের কাছে আকুতি জানিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার বেনীপুর গ্রামে ছায়া দেবীর বাড়ি। চার ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় ছায়া দেবী ২০০৯ ও ২০১১ সালে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। পরে ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগে। কিন্তু কিছুদিন পর থেকেই তিনি অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন। আস্তে আস্তে তার মাথা খারাপের দিকে যেতে থাকে।
যে মেয়ে এক সময় সংসারের হাল ধরার কথা তাকে এখন শিকলে বন্দি করে রাখা হয়েছে। ফিকে হয়ে আসছে বাবা-মায়ের সেই স্বপ্ন। ওই ছাত্রীকে আমনুরা ও রাজশাহী মিশন হাসপাতালে একাধিকবার তার চিকিৎসাও করানো হয়। কিন্তু কাজ হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় সমস্যা আরও প্রকট হয়ে ওঠে।
ওই সময় অর্থাভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে না পারায় নিরুপায় হয়ে প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে বাড়িতেই অবস্থান ছায়ার। বাড়িতেই শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতে হচ্ছে তাকে।
বর্তমানে ছায়া দেবীর সেবা করতে এগিয়ে এসেছেন ওই এলাকার ভেরেন্ডী বাজারের পল্লী চিকিৎসক আবদুল খালেক ও তার স্ত্রী হাসনারা বেগম। এক মাস ধরে তারা প্রতিদিন সকালে শিকল খুলে ছায়া দেবীকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যান। সারা দিন তার সেবা-যত্ন করার পর সন্ধ্যায় আবার ছায়াকে তার বাড়িতে রেখে আসেন।
ছায়ার বাবা লাল টুডু বলেন, দিন দিন অবস্থা খারাপ হচ্ছে ছায়ার। দ্রুত তার উন্নত চিকিৎসা করানো প্রয়োজন। এ জন্য দরকার প্রায় তিন লাখ টাকা। আমার পক্ষে এই টাকা কোনোমতেই জোগাড় করা সম্ভব নয়।
ছায়া দেবীকে সহায়তা করতে চাইলে বিকাশ নম্বরে যে কেউ সহায়তার অর্থ পাঠাতে পারেন। ব্যক্তিগত বিকাশ নম্বর হচ্ছে (০১৭১৯১০৫৪৮৯)। (নেজামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নিতাই চন্দ্র বর্মন এর নম্বর)। মেধাবী ওই ছাত্রীটিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন। একটি স্বপ্নকে জাগিয়ে তুলুন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন