ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি সুফিয়া কামাল হল থেকে মধ্যরাতে ছাত্রীদের বের করে দেওয়া হয়নি, তাদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আক্তারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘মেয়েদের বের করে দেওয়া হয়নি। তিন ছাত্রীকে অভিভাবকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বের করে দেওয়ার কথাটা গুজব। এর মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানোর পাঁয়তারা চলছে। হল থেকে কাউকেই বের করে দেওয়া হয়নি।’

বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) রাতে সুফিয়া কামাল হল থেকে তিন ছাত্রীকে বের করে দেওয়ার ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে আজ শুক্রবার সকালে উপাচার্য ড. মো. আক্তারুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে এসব কথা বলেন। কেন তিন শিক্ষার্থীকে হল ছাড়তে হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা কারণ জানার চেষ্টা করছি। তা জানতে পারলে জানাবো।’

বৃহস্পতিবার রাতে সুফিয়া কামাল হল থেকে বের করে দেওয়া তিন ছাত্রী হলেন— গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শারমীন শুভ, থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কামরুন্নাহার লিজা ও গণিত বিভাগের পারভীন। রাত ১০টার দিকে পারভীন ও লিজা এবং রাত ১২টার দিকে শুভকে হল ছাড়তে হয়। তাদের অভিভাবকরা এসে তাদের নিয়ে যান। এ সময় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রিমির বাবা ধামরাই থেকে সুফিয়া কামাল হলে উপস্থিত হন রাত সাড়ে ১২টার দিকে। পরে তিনি একাই হল অফিস থেকে বেরিয়ে আসেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট ড. সাবিতা রেজওয়ানা রহমানও দাবি করেন, শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা স্বেচ্ছায় তাদের মেয়েদের হল থেকে নিয়ে গেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘১০ এপ্রিল রাতে যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গুজব ছড়িয়েছে, মোবাইল চেক করে আমরা তাদের শনাক্ত করেছি। গুজব ছড়ানোর সঙ্গে যাদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে, তাদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে অভিভাবক ডেকে তাদের হাতে তুলে দিয়েছি।’

তবে শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে প্রভোস্ট ড. সাবিতা বাংলা ট্রিবিউনের কাছে দাবি করেন, অভিভাবকরা স্বেচ্ছায় মেয়েদের নিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, ‘এশা একজন শিক্ষার্থীর রগ কেটে দিয়েছিল বলে যে গুজব ১০ এপ্রিল ছড়ানো হয়েছিল, মোবাইল চেক করে ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করেছি। যারা ওই ঘটনায় জড়িত ছিল, তাদের অভিভাবকদের হলে ডেকেছি। তাদের ওই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ভিডিওগুলো দেখানো হয়েছে। তখন অভিভাবকরা নিজেরাও লজ্জা পেয়েছেন এবং তারা স্বেচ্ছায় তাদের মেয়েদের নিয়ে গেছেন।’