কোটা সংষ্কার আন্দোলনে অংশগ্রহনকারীদের নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টারদা’সূর্য সেন হলে প্রাধ্যক্ষের সাথে মত বিনিময় করে শিক্ষার্থীরা। নিরাপত্তা চেয়ে কথা বলায় রাতে ছাত্রলীগের হয়রানির শিকার হয়েছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাদের হল থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করে ছাত্রলীগ।
জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যায় সাম্প্রতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া মাস্টারদা’ সূর্য সেন হলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। হলের টিভিরুমে অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, হলের আবাসিক শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী হল সম্পর্কে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা যারা কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহন করেছি তারা বিভিন্ন রকম হুমকি পাচ্ছি। আমাদেরকে হল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে। আমরা প্রশাসনের হলে আমাদের নিরাপত্তা চাচ্ছি।
আবাসন সঙ্কট এবং হলের সিট বরাদ্ধ নিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, হল থেকে সিট বরাদ্ধ দেয়া হয় কিন্তু আমরা সে সিটে উঠতে পারি না। সে সিটগুলো দখল করে রাখে অন্যরা। হলে অনেকে একজনে দুই-তিন রুম দখল করে রাখার মতো নজিরও আছে। অথচ আমরা এককক্ষে থাকি আট নয়জন করে। সকালে ঘুম থেকে উঠলেই আমাদের ছাত্র সংগঠনের প্রোগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। যাদের রাজনীতি করার ইচ্ছা আছে তারা প্রোগ্রামে যাবে। কিন্তু কেন আমাদেরকে আমাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে প্রোগ্রামে নিয়ে যাওয়া হবে।
হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল তখন বলেছিলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাসহ হলে যেকোন বিষয়ে কোন সমস্যা হলে তোমরা সরাসরি আমার কাছে অভিযোগ করবে। আমি অবশ্যই এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।
এদিকে মত বিনিময় শেষে রাতে যারা কথা বলেছেন তার মধ্যে শওকত ও মশিউরকে হল থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করে ছাত্রলীগ। হলের শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসানের নির্দেশে তাদের বের করে দেয়ার চেষ্টা করে হল ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম সারোয়ার এবং সাধারণ সম্পাদক নাহিদ হাসান শাহিন।পরে আবাসিক শিক্ষকদের হস্তক্ষেপে তা বন্ধ হয়।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের মশিউর রহমান পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, আমাকে কিছু বড় ভাই এসে বুঝিয়েছে কোটা সংস্কার আন্দোলনের না যাওয়ার জন্য।
শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের এর শওকত বলেন, আমি শুরু থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছিলাম। হল মতবিনিময় সভায় এ বিষয়ে কথা বলেছিলাম। পরে আমাকে হল থেকে চলে যেতে বলে। কিন্তু হলের একজন আবাসিক শিক্ষক এসে আমাকে রাখতে বলে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম সারোয়ার বলেন, কাউকে বের করা চেষ্টা করা হয়নি। সাধারণ সম্পাদাক নাহিদ হাসান শাহিন বলেন, বের করে দেওয়ার বিষয়টি অস্বিকার করেন। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসানকে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন