ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় বাড়িঘর থেকে বন্যার পানি নামলেও ফসলের মাঠে এখনো জমে রয়েছে পানি। পানি কমার সাথে সাথে আবার চাষাবাদ শুরু করতে অনেক দেরি হয়ে গেছে। এ কারণে উপজেলায় ভাসমান সবজিক্ষেত ও ধানের বীজতলা তৈরি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ভাসমান বীজতলার কার্যক্রম তদারকি চলছে।
বন্যার পানি কমার সাথে সাথে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা পুরোদমে নেমে পড়েছেন কৃষিকাজে। এখনো অনেক ক্ষেতে বন্যার পানি রয়ে গেছে। এ পানি শুকিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে যেন চারা রোপণ করা যায় সেজন্য কৃষকেরা পানির ওপরেই সবজি চাষ ও ধানের ভাসমান বীজতলা তৈরি করেছেন।
সরেজমিন উপজেলার কয়েকটি এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, যেসব স্থানে বন্যার পানি দ্রুত নেমে যাচ্ছে সেখানে সরাসরি মাঠের মধ্যে বীজতলা তৈরি করছেন কৃষকেরা। আর যেসব জায়গায় পানি রয়েছে সেখানে হচ্ছে ভাসমান বীজতলা। এসব বীজতলায় সবজির মধ্যে লাউ, শিম, বরবটি ও ফুলকপির চারা রোপণ করা হচ্ছে। ধানের মধ্যে আমনের বীজ ছিটানো হচ্ছে।
কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় বন্যা, বৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারের সময় জমিতে জলাবদ্ধতার কারণে কৃষকেরা কলাগাছের ভেলায় রোপা আমনের ভাসমান বীজতলা তৈরি করেছেন। একটা সময় ছিল কাঁঠালিয়া উপজেলায় অনেক আবাদি জমি পতিত থাকত। এখন আর কোনো জমি পতিত থাকে না বা কৃষকেরা অলস সময় কাটান না। পোকামাকড়ের হাত থেকে ক্ষেত বাঁচাতে কীটনাশকের পরিবর্তে জৈবসার-গাছের ডাল বা কঞ্চি দিয়ে পার্চিং পদ্ধতির মাধ্যমে পোকার আক্রমণ থেকে ক্ষেত রাখছেন সুস্থ-সবল। তৈরি হচ্ছে ভাসমান ধান বীজতলা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, তৈরিকৃত ভেলায় প্রতি বর্গমিটারে ৮০-১০০ গ্রাম অঙ্কুরিত বীজ ফেলতে হয়। পানির ওপর ভাসমান থাকার কারণে এ রকম বীজতলায় পানি সেচের দরকার হয় না। বীজ বপনের ২৫-৩০ দিন পরই চারা রোপণের উপযোগী হয়। এভাবে তৈরি এক বর্গমিটার বীজতলার চারা দিয়ে ২০ বর্গমিটার পর্যন্ত রোপণ করা যায়। অর্থাৎ ১ শতাংশ জমির চারায় কমপক্ষে ২০ শতাংশ জমিতে ধান রোপণ করা যায়।
তিনি আরো বলেন, কৃষি অফিস থেকে তাদের বন্যার পানিতে ভাসমান আগাম সবজির ক্ষেত ও ধানের বীজতলা তৈরি করতে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। কয়েকটি স্থানে সবজি ও ধানের বীজতলা হাতে-কলমে তৈরি করে কৃষকদের দেখানো হয়েছে। এরপর কৃষকেরা নিজেই সবজি ও ধানের বীজতলা তৈরি করছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন