বিজ্ঞানীরা বলছেন, গত বছর ( ২০১৬ সালে ) পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, যা গত ৮ লাখ বছরে এর পরিমাণ এতটা বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়নি। সূত্র: বিবিসি বাংলা, প্রথম আলো।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা বলছে, পৃথিবীতে মানুষের কর্মকাণ্ড এবং এল নিনোর প্রভাবের কারণে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ রেকর্ডের স্তরে পৌঁছেছে এবং এর বৃদ্ধির হার গত ১০ বছরে গড় হারের চেয়েও বেশি।
বিজ্ঞানীরা কার্বন-ডাই-অক্সাইডের এত উচ্চ হার দেখে বিস্মিত হয়েছেন।
বিশ্বের ৫১টি দেশের গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এবারের প্রতিবেদন দিয়েছে ডব্লিউএমও। গতকাল সোমবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানায়, ২০১৬ সালে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস মেশার গড় হার ছিল ৪০৩ দশমিক ৩ পিপিএম (পার্টস পার মিলিয়ন)। এর আগের বছর এই হার ছিল ৪০০ পিপিএম।
এই প্রতিবেদনে দেশভিত্তিক কার্বন নিঃসরণের তথ্য তুলে ধরা হয়নি। তবে বিশ্বব্যাংকের ২০১৫ সালের গ্লোবাল কার্বন অ্যাটলাস শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই বছর বিশ্বে ৩৬ হাজার ২৬২ মেট্রিক টন কার্বন নিঃসরণ হয়। সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণ করেছিল চীন—১০ হাজার ৩৫৭ টন। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত যথাক্রমে ৫ হাজার ৪১৪ টন ও ২ হাজার ২৭৪ টন নিঃসরণ করেছে। বাংলাদেশের নিঃসরণ করা কার্বনের পরিমাণ ছিল ৭৭ টন।
বিশ্বের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কার্বন নিঃসরণ বৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত থাকলে এই শতাব্দীর মধ্যে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বাড়তে না দেওয়ার যে পরিকল্পনা জাতিসংঘ নিয়েছিল, তা পূরণ করা অসম্ভব হয়ে যাবে। ব্যর্থ হবে প্যারিস জলবায়ু চুক্তির লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা।
এ ব্যাপারে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত প্রথম আলোকে বলেন, ‘কার্বন নিঃসরণ যে হারে বাড়ছে বলে এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, তা আমাদের আতঙ্কিত করছে। কেননা, বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের যে ধরন দেখা যাচ্ছে, তা সামনের দিনগুলোয় আরও বাড়বে বলেই এই প্রতিবেদনে স্পষ্ট হয়েছে। ফলে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোয় বন্যা, ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের মতো দুর্যোগ বাড়বে। এই পরিস্থিতি মাথায় রেখে আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলো নিতে হবে।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন