খাবারের সন্ধানে চলনবিলে ছুটে এসে শিকারিদের ফাঁদে ধরা পড়ছে পরিযায়ী পাখিসহ দেশীয় নানা প্রজাতির পাখি। এসব পাখি ফেরি করে বিক্রি হচ্ছে স্থানীয় হাট-বাজারে। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না প্রশাসনের পক্ষ থেকে। ফলে নির্বিচারে পাখি নিধনে নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চলনবিল এলাকায় বন্যার পানি নামতে শুরু করায় খাল, বিল, নালা ও জলাশয়গুলোতে কমছে পানি। জেগে উঠছে খেত। পাওয়া যাচ্ছে ছোটবড় মাছ। বিলে বোনা আমন ধানও রয়েছে। এসব মাছ ও ধান খাওয়ার লোভেই নানা প্রজাতির পরিযায়ী ও দেশীয় প্রজাতির পাখি ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে চলনবিলে। কিন্তু বিষটোপ, জাল ও ফাঁদ পেতে নির্বিচারে পাখি শিকার করছে মৌসুমী পাখি শিকারীরা।
এলাকার প্রবীণ শিক্ষক আবুল কাশেম বলেন, আশির দশক পর্যন্ত মাছ আর পাখির অভয়াশ্রম ছিল চলনবিল। খাদ্যের সন্ধানে পাখির আনাগোনা ছিল লক্ষণীয়। এখন তা অতীত। কারণ অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট ও বাড়ি নির্মাণের কারণে আগের মতো নেই চলনবিল। কমেছে মাছের উৎপাদন ও পাখির আনাগোনা। এক শ্রেণির লোভী মানুষ চলনবিল থেকে নানা পন্থায় পাখি শিকার করে স্থানীয় হাট-বাজারে ফেরি করে বিক্রি করছেন। রাতের শেষ প্রহর থেকে ভোর পর্যন্ত তারা এসব পাখি শিকার করে থাকেন।
গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় বাজারের কয়েকজন পাখি বিক্রেতা বলেন, চলনবিলের সব উপজেলায়ই পাখি শিকারি রয়েছেন। সবাই হাটে ফেরি করে বিক্রি করেন না। দেশের বিভিন্ন মোকামে তারা বিক্রি করেন বেশি দামে। প্রতিটি বক ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা, বালিহাঁস ৫০০ টাকা ৬০০ টাকা এবং চাকলা পাখি প্রতি হালি বিক্রি করছেন ৩২০ টাকা ৪০০ টাকায়। তবে পরিযায়ী পাখি ওজন আকৃতি ভেদে দেড় হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে।
গুরুদাসপুর বন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, লোকবলের সংকটের কারণে সবদিকে নজর দিতে পারেন না। তা ছাড়া সরকারিভাবে পরিবহন সুবিধাও নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, পাখি শিকার জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর। পাখি যাতে হাট-বাজারে বিক্রি না হয়, এ জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
শীর্ষনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন