ইতিপূর্বে আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে চলতি জানুয়ারি মাসে বৃষ্টি বা তীব্র শৈত্যপ্রবাহের উল্লেখ না থাকলেও সম্প্রতি পরিবর্তন আনা হয়েছে পূর্বাভাসে। এতে বলা হয়েছে, এ মাসেই বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ১টি মাঝারি অথবা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ এবং অন্যত্র ২-৩টি মৃদু ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
তবে সংস্থাটি যা-ই বলুক না কেন, দেশজুড়ে শীতের প্রকোপ কিছুটা কমেছে। উন্নতি হয়েছে তাপমাত্রার। তবে আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ জানান, আগামী দিনগুলোতে শীতের প্রকোপ বাড়তে পারে। সামগ্রিকভাবে এই শৈত্যপ্রবাহ মৃদু বা মাঝারি এবং অঞ্চলভেদে তীব্র শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিতে পারে। এ ছাড়া আকাশ আংশিক মেঘলাসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করলেও সহসাই এই শীত যাচ্ছে না। এ মাসের শেষ দিকে আরও একটি শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। প্রতিদিনই বাড়ছে ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। এভাবে দিন যত যাবে, তত তাপমাত্রা বাড়বে। তিনি আরও জানান, শৈত্যপ্রবাহ পরিস্থিতির উন্নতি হলেও জানুয়ারি মাসজুড়েই শীতের প্রকোপ থাকবে।
এর আগে দেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড পাওয়া গেছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। সেখানে ব্যারোমিটারের পারদ ২ দশমিক ৬ ডিগ্রিতে থমকে ছিল, যা ছিল ৫০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। তারও আগে সর্বশেষ তীব্র শীত পড়েছিল ১৯৬৮ সালে। ওই বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি সিলেটের শ্রীমঙ্গলে ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। এরও ২০ বছর আগে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত এই তাপমাত্রার রেকর্ড খুঁজে পায়নি আবহাওয়া অফিস। তবে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, তাপমাত্রা ধীর লয়ে বাড়তে থাকবে। উন্নতি ঘটবে শৈত্যপ্রবাহ পরিস্থিতির; তবে শীত অনুভূত হবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ছয় কারণে এই ‘অতিতীব্র’ শৈত্যপ্রবাহ চলেছে। উচ্চবলয় বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত। ভূপৃষ্ঠ থেকে আকাশের দিকে প্রায় ২০০ মিটারের একটি কুয়াশাস্তর ছিল। এর কারণে সূর্যের আলো ভূপৃষ্ঠে আসতে পারেনি। ফলে ভূপৃষ্ঠ এবং এর সংলগ্ন বাতাসের উষ্ণতা বাড়তে পারেনি। তা ছাড়া ভারতের হরিয়ানা, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গের তাপমাত্রা অনেক কম। শীত মৌসুমে সাধারণত ওইসব এলাকা (উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিক) থেকে বাংলাদেশমুখী বাতাসের গতি থাকে। সেটিও শীতল। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মেঘমুক্ত আকাশ। সাধারণত আকাশ মেঘলা থাকলে বিকিরণ প্রক্রিয়ায় ভূপৃষ্ঠ শীতল হতে সময় লাগে। তাপমাত্রা ভূপৃষ্ঠে বেশিক্ষণ থাকতে পারে। ফলে ধরণী শীতল হতে না হতেই নতুন দিনের সূর্যোদয় ঘটে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন