কুরআন নাজিলের মাস রমজান। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রশিক্ষণের মাসও এটি। এ মাসে হজরত জিবরিল আলাইহিস সালাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কুরআন কারিম তেলাওয়াত করে শোনাতেন। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও তার সঙ্গে কুরআন তেলাওয়াত করতেন। এ প্রিয়নবির এ সিরাত রমজান পরবর্তী সময়ের জন্য শ্রেষ্ঠ প্রশিক্ষণও বটে।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কুরআনের এ প্রশিক্ষণের ধারা এখনও রমজান মাসে বাস্তবায়িত হয়। উম্মতে মুহাম্মাদি এ মাসে বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত, অধ্যয়ন ও আমলের মাধ্যমে প্রিয়নবির সুমহান সীরাতকে অনুসরণ করে।
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘জিবরিল আলাইসি সালাম রমজান মাসের প্রতি রাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন এবং তাকে নিয়ে কুরআন পাঠ করতেন।’ (বুখারি)
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ আমলের মর্যাদা অনেক বড়। যে ব্যক্তি প্রিয়নবির সীরাত অনুসারে কুরআন পাঠ করে এবং সে অনুযায়ী আমল করে, তার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা এ নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে, সে দুনিয়াতে পথ ভ্রষ্ট হবে না এবং পরকালে দুর্ভাগা-হতভাগাদের অন্তর্ভূক্ত হবে না।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘সুতরাং যে আমার দেয়া হেদায়াতের (কুরআনের) পথ অনুসরণ করবে, সে পথভ্রষ্ট হবে না এবং দুঃখ-কষ্টেও পতিত হবে না।’ (সুরা ত্বাহা : আয়াত ১২৩)
রমজান মাসব্যাপী কুরআন তেলাওয়াত, অধ্যয়ন ও আমলের মাধ্যমে মানুষ সঠিক পথের সন্ধান পেয়ে থাকে। যে কারণে মানুষ অন্যায় থেকে ফিরে থাকে। যার ফলে কুরআন তেলাওয়াতকারীর জন্য কুরআন ও হাদিসে সফলতা ও পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
হজরত ওসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু রমজানে ৩ দিনে একবার কুরআন খতম করতেন। সালফে সালেহীগণ নামাজে ও নামাজের বাইরে কুরআন খতম করতেন।
রমজানে কিয়ামুল লাইলে তাদের কেউ কেউ ৩ দিনে কেউ কেউ ৭ দিনে আবার কেউ কেউ ১০ দিনে কুরআন খতম করতেন।
এ কারণেই ইমাম জুহরি রহমাতুল্লাহি আলাইহি রমজান মাসে ইলমে হাদিসের পাঠ ও ইলমি মজলিস ত্যাগ করে পবিত্র কুরআন পাঠে আত্মনিয়োগ করতেন।
মনে রাখতে হবে
কুরআন তেলাওয়াত, অধ্যয় এবং আমলেই রয়েছে পরিপূর্ণ সফলতা ও মহা পুরস্কার। আর রমজান পরবর্তী সময়েও যদি মানুষ রমজানের কুরআন তেলাওয়াতের এ এ অভ্যাস জারি রাখে তবে সে হবে পরিপূর্ণ সফল। আর আল্লাহ তাআলা কুরআনকে রমজানে নাজিল করেছেন মানুষের সার্বিক বরকত লাভের জন্য। যাতে পরবর্তী মাসগুলোতেও এর বরকত বিদ্যমান থাকে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজানের কুরআন তেলাওয়াত ও এর প্রশিক্ষণকে বছরের অন্যান্য মাসগুলোতে নিজেদের মধ্যে বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। যাবতীয় কল্যাণ বরকত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন