একদা এক রাজা ছিলেন। তার একটি পোষা বানর ছিল। বানরটি তার সিংহাসনের পাশেই বাধা থাকতো। রাজা যখন সভায় আসতেন এসেই হাতের ছড়ি দিয়ে ঐ বানরকে একটা পিটান দিতেন। আবার যখন সভা ছেড়ে যেতেন তখন আবার একটি পিটান দিতেন। একবার এক বিদেশী অতিথী এলেন রাজার দরবারে। আসার পথে তিনি জনগণের কাছ থেকে রাজার বেশ প্রশংসাই শুনে এলেন। কিন্তু রাজার সাথে দরবারে এসে দেখলেন একি! বাইরে যার প্রশংসা শুনে এলেন ন্যায়পরায়ন রাজাই কিনা ভেতরে ভেতরে এত নির্দয়!!
তিনি রাজাকে ব্যাপারটি জিজ্ঞাসা করলেন ও ব্যাখ্যা জানতে চাইলেন। রাজা তাকে বললেন এর উত্তর পেতে তোমাকে আমার সাথে এক সপ্তাহ থাকতে হবে। মেহমান রাজি হলেন। রাজা প্রথম দিন এলেন বানরকে পেটালেন না। বানরও স্বাভাবিক। এ দেখে মেহমান বেশ উচ্ছসিত। এরপরের দিন রাজা এলেন। আলাপ আলোচনার মধ্যে সবাই খেয়াল করলেন যে, বানরটি সিংহাসনের কিছুটা কাছাকাছি এসে বসলো। পরের দিন বানরটি আরও কাছে এলো। পরের দিন বানরটি সিংহাসনের হাতলের ওপরই উঠে বসলো। এর পরের দিন বানরটি রাজার কাঁধেই উঠে বসলো। এ দৃশ্য দেখে সভাসদরা হই চই করে উঠলো। তারা এগিয়ে এল, কিন্তু রাজা তাদের নিবৃত করলেন। মেহমানও কিছুটা লজ্জিত হলো। এর পরের দিন বানরটি রীতিমত সবাইকে অবাক করে দিয়ে রাজার মাথার মুকুটের ওপরে উঠে বসলো। এবার রাজা মেহমানকে বললেন - “আপনি কি আপনার জিজ্ঞাসার জবাব পেয়েছেন?” মেহমান বিনয়ের সাথে বললেন- “আলবৎ পেয়েছি”...
প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কার্যালয়ে ভিসির চেয়ারের হাতলের উপরে বসতে গেলে কি মাপের বানর হতে হয় তা হয়তো বুঝিয়ে বলার সাধ্য আমার নেই। ভিসির হাতলে উপবেশনকারী লোকটির এ আচরণে ভিসিরও যে কিছু করার ক্ষমতা নেই তা খুব নিশ্চিত করেই বলা যায়। কারণ বানর শায়েস্তা করতে ন্যায়পরায়ন রাজা হতে হয়, দুর্নীতিতে আকন্ঠ নিমজ্জমান ভিসি নয়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন