আলই আহম্মদ মাবরুর
জামায়াতের মানুষের মধ্যে সামাজিক কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার নজির কম- এটা অভিযোগ আকারে প্রায়শই শুনি। আমার কাছে অবশ্য বিষয়টা পুরোপুরি সত্য মনে হয়না। আমার মনে হয়, জামায়াত বা শিবির যতটুকু মানুষের জন্য কাজ করে, সামাজিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত হয় তা বাংলাদেশের কনটেক্সটে কম নয়। অন্তত অন্য দলের তুলনায় তো নয়ই। সমস্যা হলো এগুলো প্রচার করা হয়না। আজও জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর এক বিবৃতিতে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য, কম্বল ও গরম কাপড় পৌছে দেয়ার জন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। বাংলাদেশের আর কোন দল কি এমন আহবান জানিয়েছে? আমার চোখে এখনও পড়েনি তেমন কোন তথ্য।
দুদিন আগের ঘটনা বলি। চট্টগ্রাম নগরীতে আগুনে পুড়তে থাকা এক প্রতিবেশীর ঘর রক্ষায় নিজের ফ্ল্যাট থেকে পানি নিয়ে সীমানাপ্রাচীরের উপর দাঁড়িয়ে ছিটাতে গিয়ে পা ফসকে মারা গেলেন জামায়াত নেতা আবু কাউসার। তার বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া গ্রামে।
কাউসার ভাই ছিলেন মৎস্য চাষী ও ব্যবসায়ী। তার স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়ে রয়েছে। বড় মেয়ে ক্লাস থ্রিতে পড়ে, ছোটটির বয়স বছর তিনেক। জানা গেছে, শনিবার বেলা সোয়া ৩টার দিকে লালখানবাজার এলাকার মমতা ক্লিনিকের কাছে জনৈক আবুল হোসেনের বসতঘরে আগুন লাগে। গ্যাসের চুলা থেকে সৃষ্ট আগুনে সেমি পাকা ঘরে ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের লোকজন তা নেভাতে এগিয়ে আসেন। তাদেরই একজন ছিলেন আমাদের ভাই, জামায়াতের সক্রিয় নেতা কাউসার ভাই। নিজের ফ্ল্যাট থেকে পানি নিয়ে এগিয়ে যান তিনি।
“কাউসার ভাই বাড়ির সীমানা প্রাচীরের দেয়ালে উঠে পানি দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় পা পিছলে দেয়াল থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন। পরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য শাহজাহান চৌধুরী তার জানাজায় ইমামতি করেন। পরবর্তীতে তার আরো দুটি জানাজা হয়। একটি হয় সাতকানিয়ার কেরানীহাট নামক স্থানে রাত ৯.৩০ সময় আর সর্বশেষ জানাজা হয় লোহাগাড়ার পদুয়ায় উনার বাড়ির পাশে। পরে তাকে লোহাগাড়ায় গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।
মেইনস্ট্রিম মিডিয়াগুলো এই খবর প্রচার করবেনা এটা জানি। কিন্তু আমরা কয়জনই বা বিষয়টা ফলাও করে প্রচার করেছি?? নিজেদের ভাল কাজগুলোর প্রচার না করলে নিজেদের নিয়ে হীনমন্যতা কমবেনা কখনোই।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কাউসার ভাইকে শাহাদাতের সম্মান দিন। তার পরিবারের জন্য তিনি অভিভাবক হয়ে যান। আমীন
পাঠক মন্তব্য
কাউসার ভাই আমাদের সম্মানিত করলেন,আল্লাহ আপনাকে সম্মানিত করুক।হাজার হাজার ইসলামী আন্দোলনের নেতা কর্মীরা চোখের পানি ছেড়ে সাক্ষ্য দিচ্ছে, কাউসার ভাই, আমাদের অভিভাবক ছিলেন,ছাঁয়া ছিলেন।আমি দেখেছি আপনার কোন পদ ছিলনা,কিন্তু আপনি দায়িত্বশীল ছিলেন।আল্লাহ আপনার ভাল কাজ গুলো কবুল করে শহীদ হিসেবে কবুল করে নিক।
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন