‘ম্যাডাম না বলে আপা বলায়’ সম্প্রতি স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর উপর ক্ষিপ্ত হন পাবনার বেড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা খানম। তখন ইউএনও সাংবাদিককে বলেছিলেন, আপনি কতদিন ধরে সাংবাদিকতা করেন। আপনি জানেন না একজন ইউএনওকে স্যার বা ম্যাডাম বলতে হয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কে কাকে স্যার বলবে?’ শিরোনামে ফেসবুকে লিখেছেন সাংবাদিক জিয়া হাসান।
ফেসবুকে তিনি লিখেছেন,
“একটি পোস্টে দেখলাম এক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ম্যাডাম সম্বোধন না করায় এক সংবাদ কর্মী বাজে আচরণের সম্মুখীন হয়েছেন। ব্যাপারটি দুঃখজনক এবং আরও দুঃখজনক হল এমন ঘটনা প্রায়ই পত্রিকায় আসে। এই বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা থাকা দরকার সরকারের পক্ষ থেকে। আমাদের রাষ্ট্রটি গণপ্রজাতন্ত্রী। প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জনগণ স্যার-ম্যাডাম সম্বোধন করবে নাকি প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণকে (যারা সকল ক্ষমতার উৎস) প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীগন স্যার সম্বোধন করবে? নাকি উভয় উভয়কে করবে?
একজন সিনিয়র কর্মকর্তা যার বয়স পঞ্চাশের কোঠায় তাকে স্যার/ম্যাডাম সম্বোধন করা যেতেই পারে, তার বয়সের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে এবং এটা দুপক্ষের বেলাতেই প্রযোজ্য। আমরা রাস্তা ঘাটে বয়স্ক কাউকে দেখলে সালাম দেই, মুরুব্বি কিম্বা চাচা সম্বোধন করি, এটা তারই প্রতিফলন। কিন্তু এটা বাধ্যতামূলক কিছু নয়, সৌজন্যতা এবং আদব-কায়দার অংশ। উন্নত বিশ্বে এটার প্রচলন সবচেয়ে বেশি।
মাঝ বয়সী থেকে সিনিয়র সিটিজেনদের পুলিশ থেকে শুরু করে অফিস আদালত, দোকান-পাট, রাস্তা-ঘাট সর্বত্র সাধারণত স্যার সম্বোধন করা হয়, তাদের বয়সের প্রতি সম্মান জানিয়ে। পঞ্চাশের খুব কাছে চলে আসায় আমারও এই অভিজ্ঞতাটি হয় কানাডাতে। বাংলাদেশে দু-একজন সরকারি কর্মকর্তার ভাব দেখলে মনে হয়, এরা লর্ড মাউন্ট ব্যাটেন পরিবার থেকে এসেছে। গরিব দেশে অন্যতম সেরা চাকরী বিসিএস অফিসার হয়ে গেলে একশ জনের মধ্যে একজনের এই ভাব হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এর জন্য দায়ী নৈতিকতা সমৃদ্ধ প্রকৃত শিক্ষা এবং উপযুক্ত পারিবারিক শিক্ষার অভাব।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো এখন শিক্ষার্থী নয়, পরীক্ষার্থী নিয়ে ব্যস্ত। তাদের এ+ পাওয়াতে হবে। সন্তানকে নিয়ে সন্ধ্যা কাটান, পড়ালেখার খোজ নেয়া, একসাথে খাওয়া এবং গল্প করা এই বাবা-মাদের সংখ্যা ক্রমেই ভীষণভাবে কমে যাচ্ছে। পারিবারিক মূল্যবোধ, শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সন্তান। এর প্রতিফলন ঘটছে পরবর্তীতে। তবে এই ভাবটা অন্য অংশের বেলাতেও প্রযোজ্য। জনসাধারণের একটী অংশ যখন দুর্নীতি করে প্রচুর অর্থ সম্পদের মালিক হয়, তখন তারাও রায় বাহাদুর চৌধুরীর হাব-ভাব নিয়ে ঘুরে বেড়ায় এবং ধরা কে সরা জ্ঞান করে। আদব- কায়দা, সম্মান, পারষ্পারিক শ্রদ্ধাবোধ, সহমর্মীতা ইত্যাদি শেখার শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হল বাড়ি তথা পরিবার। আপনি যখন অন্যকে সম্মানিত করছেন তখন আপনি আসলে নিজেকেই সম্মানিত করছেন ।
একবার টাঙ্গাইলে এসপি সাহেবের অফিসে বসে তাঁর সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম। এমন সময় একজন দিনমজুর ভাই রুমে প্রবেশ করে সালাম দিলেন, এসপি সাহেব উত্তর দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ভাই,আপনি খালি পায়ে ঢুকলেন কেন? আমিও তখন লক্ষ্য করলাম লোকটি খালি পায়ে।
স্যার, এমনিতেই।
কেউ আপনাকে খালি পায়ে ঢুকতে বলেছে?
না, স্যার।
যান, জুতো পড়ে আবার আসেন।
লোকটি পুনরায় প্রবেশ করলে, এসপি সাহেব সামনের চেয়ার দেখিয়ে বললেন, “এখানে বসেন, এবং বলেন আপনার কি সমস্যা।”
এই নিরীহ লোকটিকে সম্মানিত করে এসপি সাহেব কি নিজেকেই সম্মানিত করলেন না? এই লোকটি যতদিন বেঁচে থাকবে, শ্রদ্ধা এবং ভালবাসা নিয়ে এই পুলিশ সুপারকে মনে রাখবে।
পাঠক মন্তব্য
"এটা দুপক্ষের বেলাতেই প্রযোজ্য। আমরা রাস্তা ঘাটে বয়স্ক কাউকে দেখলে সালাম দেই, মুরুব্বি কিম্বা চাচা সম্বোধন করি, এটা তারই প্রতিফলন। কিন্তু এটা বাধ্যতামূলক কিছু নয়, সৌজন্যতা এবং আদব-কায়দার অংশ। উন্নত বিশ্বে এটার প্রচলন সবচেয়ে বেশি। "
Some uneducated beyadob journalist attacking this official as if they have nothing else to do. We are not witnessed to the incident. But it is easily could be deciphered that she was advising him (could not be her) about office protocol. The so-called journalists jumped on the story like vultures. Some uncivilized editors allowed or published comments from uncivilized, uneducated, and from people eve teasing mentality. Madam, it a brilliant idea for you not responding. I am sure there are educated journalists who will come to your defense. If you do your job with sincerity, Allah will help you and these vultures can do no harm.
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন