মোহাম্মদ এ. আরাফাত
অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর এই হামলায় অবাক হচ্ছেন? অবাক হওয়ার আগে ভেবে দেখুন তার মতো একজন মানুষের উপর হামলারকারীর পক্ষে অনলাইন আর অফলাইনে কী পরিমাণ লোক কথা বলছে। কেউবা সরাসরি কেউ বা ইনিয়ে বিনিয়ে। সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার আমাদের অনেক বুদ্ধিজীবী, অনেক রাজনৈতিক এমন একটা স্পর্শকাতর ব্যাপারেও মৌনব্রত পালন করছেন। একবার খোঁজ নিয়ে দেখেছেন কি এরা কারা? কি রাজনৈতিক এদের মতাদর্শ?
বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই বিভিন্ন সময় মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির ওপর, প্রগতিশীল শক্তির উপর বারবার আঘাত করা হয়েছে। ইতিহাস ভুলে গেলে চলবে না। এই কাজগুলো কারা করেছে তা কিন্ত আমরা সবাই জানি । পাকিস্তানি হানাদারদের সাথে হাত মিলিয়েও আমাদের মুক্তি ঠেকাতে ব্যর্থ জামায়াত-শিবিরই সবসময় সুযোগ খুঁজেছে কখন কীভাবে স্বাধীন বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেয়া যায়। এই স্বাধীনতাবিরোধী সন্ত্রাসী সংগঠনটি ধর্মের লেবাসে সন্ত্রাস করে দেশকে বারবার পিছিয়ে দেয়ার জন্য কাজ করেছে এবং এখনো করে যাচ্ছে।
স্বাধীনতা বিরোধী এই জামায়াত শিবির এখনো বাংলাদেশে টিকে আছে কি করে? কে তাদেরকে মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত এই সোনার বাংলাদেশে আবার রক্তের বন্যা বইয়ে দেয়ার সুযোগ করে দিয়েছে? কে তাদের এই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে? আর কেই বা তাদের গাড়িতে তুলে দিয়েছে শহীদের রক্ত মাখানো লাল - সবুজ পতাকা?
প্রশ্নগুলোর উত্তরটা কিন্ত আমাদের সবারই জানা। বিএনপি একটি আদর্শহীন রাজনৈতিক দল। আদর্শহীন বলেই তারা স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে দেশ শাসন করেছে, সুযোগ বুঝে দেশে বুনেছে সাম্প্রদায়িকতার বীজ। আসলে এটাই বিএনপির কৌশল। তারা জানে দেশের মানুষ দলমত নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, আর এটাই তাদের সবচেয়ে বড় ভয়। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি জ্বলে উঠলে কী হয় তারা তা জানে আর এজন্যই সুযোগ পেলেই চেষ্টা চালায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের কণ্ঠরোধ করে দিতে।
আর কতোদিন আমরা এসব সহ্য করবো? আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করি এই বিশ্বাসকে বুকে ধারণ করি এবার সময় হয়েছে একসাথে মিলে এদেরকে প্রতিহত করার। ধর্মব্যবসায়ী জামায়াত-শিবির আর তাদের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে চলা বিএনপিকে বর্জন এবং তাদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করার।
আমাদের দেশটা কিন্ত এমনি এমনি স্বাধীন হয়নি। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তগঙ্গা পাড়ি দিয়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। শহীদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েই বলতে চাই, আমরা কিন্তু শুধু আলোচনা-সমালোচনা করে হেলায় ফেলায় আরেকবার স্বাধীনতাবিরোধীদের সুযোগ করে দিতে পারি না দেশের ক্ষতি করার। সময় হয়েছে আরও একবার গর্জে উঠার, জয় বাংলার জন্য সংগ্রাম করার।
আমাদের এই সংগ্রামের একটাই আদর্শ সেটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। যারা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে তাদের জন্য এই সংগ্রাম। এখানে কোনো দল নেই, কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠী নেই। স্বাধীনতার প্রশ্নের দ্বিমতকারীদের বিরুদ্ধে আমার আপনার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান জানানোর সুযোগ। ভুলে যাবেন না আজকে যদি চুপ করে থাকেন একদিন হয়তো আপনার আমার গলায়ও ছুরি চালাবে। তাই আসুন দলমত ভুলে সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই জামায়াত-শিবির আর তাদের সহায়তাকারী দের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই।
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
পাঠক মন্তব্য
ব্লগার হত্যা থেকে শুরু করে জাফর ইকবালের ছুরিকাঘাত পর্যন্ত যদি আপনার প্রতিবাদের দৌড় হয়। এই রক্তপাতকেই যদি শুধু আপনার রক্তপাত মনে হয়। আর হাজারে হাজারে গুম খুন ক্রস ফায়ারের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত মানুষের রক্তপাতকে যদি আপনার রক্তপাত মনে না হয়। পাঁচই মের মাদ্রাসা ছাত্রদের ম্যাসাকার আর অসংখ্য বিএনপি আর জামাত শিবিরের নেতা কর্মীর বিচারহীন হত্যাকে যদি রক্তপাত মনে না হয়। তাহলে আপনি অসচেতনে দেশটাকে আমরা আর ওরাতে ভাগ করে ফেলেছেন। অপর পক্ষকে নির্মুল করে দেয়ার ভয়ানক খেলায় মেতেছেন। আপনার কাছে আপনার মতাদর্শের মানুষই শুধু মানুষ পদবাচ্য আর অন্যরা দানব। আপনি যেদিন সকল পক্ষই বুঝতে পারবেন জাফর ইকবালের রক্ত আর পাঁচই মের মতিঝিলে আলেমের রক্তাক্ত দেহ, কর্ণফুলীর তীরে হাত বাধা গুমখুন হয়ে যাওয়া বিএনপির নেতার লাশ, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার করাতিপাড়া গ্রামে কুপিয়ে মারা হিন্দু পুরোহিতের লাশ, আর আপনাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের বলি হাজারো শিবির কর্মির রক্তের রঙ একই রকমের লাল। যেদিন বুঝবেন এরা সবাই আপনার ভাই, আপনার সহনাগরিক সেদিন থেকেই এই রক্তপাত বন্ধ হবার শর্ত তৈরি হবে। বিভাজনের রাজনীতি আপনারা স্যেকুলারেরা তৈরি করেছেন। এর দায় আপনার। এই ভয়ানক পথ পরিহার করুন, এখনো সময় আছে। একটা রাষ্ট্রে এই বিভাজন চলতে পারেনা। বিভাজন থাকলে রাষ্ট্রই থাকেনা। আপনার প্রতিবাদকেও তাই মৃত্যুক্ষুধার গর্জন মনে হয়। Pinaki Bhattacharya.
You are such an asshole
BAL vomiting childish prattling
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন