মোস্তফা ফয়সল পারভেজ
৬ অক্টোবর ১৯৯৬, তুরষ্কের প্রথম নির্বাচিত ইসলামপন্থী প্রধানমন্ত্রী প্রফেসর ডক্টর নাজমুদ্দিন এরবাকানের আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় এক ইফতার প্রোগ্রাম। তুরষ্কের বিখ্যাত আলেম সমাজ, সুফি এবং তরিকতপহ্নিদের নিয়ে উক্ত প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়। তুরষ্কের ৭৫ বছরের ইতিহাস ভেংগে এমন প্রোগ্রামের আয়োজনে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে আতার্তুকের অনুসারী সামরিক বাহিনীর সদস্য এবং তার বাম রাজনৈতিক দলের অনুসারীরা। প্রধানমন্ত্রীর আরো কিছু বিষয়ে সেক্যুলার সংবিধানের নিয়ম ভাংগা এবং রাষ্ট্রবিরোধী ধর্মীয় উম্মাদনার অভিযোগে অভিযুক্ত করে ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭ সালে ইসলাম ও শান্তি বিরোধী ১৮ টি চুক্তিতে জোড় পূর্বক স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮ জুন ১৯৯৭ সালে তিনি পদত্যাগ করেন।
সময়ের ব্যবধানে গত ১৬ বছরে এরদোয়ানের শাসনামলে তুরষ্কে আজ অনেক কিছুরই পরিবর্তন এসেছে। যে তুরষ্কে ইফতারের প্রোগ্রামকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে প্রধানমন্ত্রীকে অভিযুক্ত করা হয়েছিলো সেই তুরষ্কে এখন ইফতারের আগে বাস স্ট্যান্ড, স্টেশনে, মসজিদে ইফতার বিলি করা হয়। যে তুরষ্কে এক সময় সেক্যুলারদের হাত দিয়ে মসজিদে আরবীতে আযান বন্ধ করা হয়েছিলো সেই তুরষ্কে সেই সেক্যুলাররাই এখন আযানের সময় তাদের বক্তব্য বন্ধ করে আযানের জবাব দেয়। যে এরবাকান হোজাকে তারা একদিন পদচ্যুত করেছিলো আজ তাদের উত্তরসুরীরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তারই দলকে সাথে নিয়ে নির্বাচনী জোট করতে বাধ্য হচ্ছে।
এরবাকান হোজা তার জীবদ্দশায় অনেক কিছু দেখে যেতে পারেনি সত্য কিন্তু তার অনুসারী এবং তার চিরন্তন বিশ্বাসে বিশ্বাসীরা যে তুরষ্কের যাত্রা শুরু করেছে তা অনেক দূর এগিয়ে নিবে বলে আমি বিশ্বাস করি। " একটি ফুল দিয়ে কখনো বসন্ত হয়না কিন্তু প্রতিটি বসন্ত শুরু হয় ফুল দিয়ে"। ১৯৬৯ সালে তুরষ্কের সেই মহান স্বপ্নদ্রষ্টা নাজমুদ্দিন এরবাকান হোজা বসন্তের যে বাগানের জন্ম দিয়েছিলেন সেই ফুল গুলোর গন্ধে শুভাসিত হয়ে ওসমানী চেতনায় আবারো দুনিয়ার নেতৃত্বের মঞ্চে প্রতিষ্ঠিত এক উন্নত তুরষ্কের জন্য দোয়া করি।
পাঠক মন্তব্য
খুব ভালো ,এ ধরনের কলাম দরকার
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন