মিনার রশিদ
প্রথম আলো সহ দেশের তথাকথিত এলিট পত্রিকা গুলো
সরকারের পক্ষে দশটি প্রোপাগান্ডা করে , মাঝে মাঝে দুয়েকটি সত্য বলে ফেলে । সরকার দশটি প্রপাগান্ডার পরেও খুশি না হলেও বিরোধীপক্ষ বিএনপি সেই একটিতেই খুশি হয়ে পড়ে । বিএনপির এই বুদ্ধিবৃত্তিক দৈন্যতা শুধু তাদের নিজেদেরই বিপদ টেনে আনে নি , সারা জাতিকেই চরম বিপদে ফেলেছে । বিএনপির এমন নেতা কম পাবেন যাদের বাসা বাড়িতে কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এই গ্রুপের পত্রিকা দুটি রাখা না হতো । এত দিনে হুঁশ ফিরেছে কি না জানা নেই ।
আজকে অনলাইনে প্রথম আলোর শীর্ষ শিরোনাম , দেশের গণতন্ত্র এখন সুরক্ষিত: প্রধানমন্ত্রী ।
প্রধানমন্ত্রী আজ শনিবার তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে দলীয় নেতা-কর্মী, পেশাজীবী, বিচারক এবং বিদেশি কূটনীতিকসহ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথাটি বলেছেন । সেই কথাটি অত্যন্ত বিশ্বস্ততা ও সাহসের সঙ্গেই দৈনিক প্রথম আলো অনলাইনে শীর্ষ শিরোনাম করেছে। প্রধানমন্ত্রীর এই দাবিটি সুবোধ বালকের মতই মেনে নিয়েছে । পুরো রিপোর্টটি পড়ে মনে হবে সরকারের একটা স্রেফ প্রেসনোট ।
ঈদের দিনে ওদের আরেকটি শিরোনাম পাঠকদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে । সেটি হলো , শাহরুখের বাসায় ঈদের খুশি নেই । শিরোনামটি দেখে ভাবলাম , এই ইন্ডিয়ান তারকার নিকটজন কেউ মারা গেছে বোধহয় । কিন্তু নাহ্ । পুরো রিপোর্টটি পড়ে জানা গেলো যে তেমন কিছু ঘটে নাই । একটি সিনেমায় অভিনয়ের জন্যে পুরো পরিবার সহ শাহরুখ খান দেশের বাইরে অবস্থান করছেন । কাজেই তার মুম্বাইয়ের বাড়িতে কোনো ঈদের খুশি নেই । সেই খবরটি দেশের বৃহত্তম সার্কুলেশনের দাবিদার এই পত্রিকাটি দেশের জনগণকে জানাতে আকুল হয়ে পড়েছে ।
অথচ এই দেশের তিন তিন বারের প্রধান মন্ত্রী ঈদের দিনটি কারাগারেই কাটিয়েছেন । এই বিষয়টি নিয়ে মূল ধারার পত্রিকা গুলোতে মন খারাপের কোনো রিপোর্ট নেই । দেশটিতে এখন কোনো সামরিক শাসন চলছে না । গণতন্ত্রের এই স্বর্ণ যুগে (!) একটা ঠুনকো অভিযোগে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় নেত্রী ও তিন তিন বারের প্রধানমন্ত্রীকে জেলে আটকে রাখা হয়েছে । সাহসী পত্রিকাটি সরকারের প্রেসনোটটিই ছাপিয়েছে । এই ফুটনোটটি যোগ করার সাহস পায় নি ।
বেগম জিয়া জামিনে থাকলে দেশে থেকে তিনি পালিয়ে যাবেন না । তারপরেও তাকে জামিন দেয়া হচ্ছে না । তাকে পরিত্যাক্ত একটা ভবনে অত্যন্ত অমানবিক অবস্থায় আটকে রাখা হয়েছে । তাঁকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ তুলেছেন । ইতোমধ্যে তিনি মাইল্ড স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন । তারপরেও যথাযথ চিকিৎসা করানো হচ্ছে না ।
এখানেকারাবিধির দোহাই দেয়া হচ্ছে । অথচ ১/১১ এর সময় শেখ হাসিনা স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন,
- এটি কোন কারা বিধিতে ?
প্রায় ১০ জন কারাবন্ধী বারডেম হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন ,
- এটি কোন বিধিতে ?
শুধু তিন বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাপারে কারা বিধির মিথ্যা দোহাই দেয়া হচ্ছে ।কোন বিধিতে শেখ হাসিনা তখন ডা মোদাচ্ছের আলী ও ডা .: প্রান গোপালকে দেখিয়েছিলেন ?
এই প্রশ্নগুলো এই প্রথম আলো গং রা করতে সাহস পাবে না । মূলত এই মতলববাজ গংদের প্রশ্রয়ে নব্য বাকশালীরা জাতিকে এই অবস্থায় নিয়ে এসেছে । এই আলো-স্টার গংরাই এক এগারোর সৃষ্টি করে বর্তমান বাকশালকে জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে ।
আগে তিক্ততা ও রাজনৈতিক ঝগড়া থাকলেও দুটি দল মোটামুটি এক সঙ্গেই দেশে অবস্থান করতে পারতো । এখন প্রথম আলো গংরা একটি দলকে বাঘের পিঠে চড়িয়ে দিয়েছে । মনে হচ্ছে , এখন থেকে আর দুই দলের প্রধানদের একজন বাইরে থাকলে অন্যজনকে জেলখানার ভেতরে থেকেই ঈদটি করতে হবে । জানি না , এই দেশটির স্বাভাবিক অবস্থা আবার কখন ফিরে আসবে ?
আমার আপনার মত সাধারণ মানুষের কর্তব্য হলো এই সব মতলববাজ ও হলুদ পত্রিকাগুলোকে বয়কট করা । এদের দুয়েকটি সত্য রিপোর্ট দেখেই বিভ্রান্ত না হওয়া । স্বাভাবিক আগ্রহ থেকেও এদের লিংকে ক্লিক না করা । তাহলেই এদের টনকটি নড়বে ।
মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ আনন্দ করবে , বাকিরা আর্থিক বা অন্য কোনো কারণে বন্চিত থাকবে - এটা ঈদের স্পিরিট নয় । সকল মত ও সকল পথের সবাই যেন একই সঙ্গে এই আনন্দে শরীক হতে পারে - পরম করুণাময়ের কাছে ঈদের এই দিনটিতে সেই প্রার্থনাই করছি ।
সকল বন্ধু ও শুভাকাঙ্খীদেরও জানাচ্ছি , ঈদ মোবারক । সবাই ভালো থাকুন ও নিরাপদ থাকুন ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন